২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

add

হকাররা ফের নগরীর রাস্তায়

todaysylhet.com
প্রকাশিত ১০ আগস্ট, শনিবার, ২০২৪ ২৩:২৬:৫২
হকাররা ফের নগরীর রাস্তায়

 

টুডে সিলেট ডেস্ক :: সরকার পতনের পর আড়ালে মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। নগরভবনের কার্যক্রমও অনেকটা স্থবির। এমন পরিস্থিতিতে অভিবাবকহীন নগরীতে হকাররা তাদের নির্ধারিত স্থান ছেড়ে ফের রাস্তায় বসে পড়েন। এতে রাস্তায় তৈরি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট। ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।

এরআগে চলতি বছরের ১০ মার্চ হকারদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে লালদিঘীপার এলাকায় হকারদের অস্থায়ী মার্কেট। প্রতিদিন দুপুর থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলতে থাকে। প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে চার একর মাঠে মাটি ভরাট, ইটের সলিং, বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা করে দেয় সিলেট সিটি করপোরেশন।

নগরীর বিভিন্ন সড়কে দেখা গেছে, ফুটপাতের পাশাপাশি মূল সড়কের অর্ধেকেরও বেশি দখল করে পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসছেন হকাররা। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। ফুটপাত ছেড়ে রাস্তার উপর দিয়ে হাটতে হচ্ছে তাদের। হকারদের কারণে নগরে যানজটও বেড়েছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সারাদেশের মতো রাস্তায় নেমে আসে সিলেটের সাধারণ মানুষও। হামলা হয় মেয়র আনোয়ারুজ্জামানের পাঠানটুলা বাসায়। তখন থেকেই আড়ালে চলে যান যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। একটি সূত্র জানিয়েছে, তিনি বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন। তবে সিসিক সূত্র জানিয়েছে, মেয়র দেশেই আছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নিয়মিত অফিস করবেন।

শনিবার সিলেট নগরের চৌহাট্টা, জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, তালতলা, সুরমা মার্কেট পয়েন্ট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, আম্বরখানা, মদিনা মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি এলাকার ফুটপাত হকারদের দখলে। সিলেট জেলা পরিষদের সামনে হকারদের বসে থাকতে দেখা যায়। জেলা পরিষদের সামনে দিনের বেলা ফুটপাতে কাপড় বিক্রি করেন হকাররা। আর বিকেলে পর রাস্তার অর্ধেক দখল করে সবজি, মাছ ও ফল বিক্রিও করছেন তারা।

এদিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ফলমূল বিক্রি করতে দেখা যায় হকারদের। খোদ নগর ভবনের ফটকের সামনেও রয়েছে হকারদের দৌরাত্ম্য। সেখানে বসে ঘড়ি, চশমা, চাবি, সবজির দোকান। নগরের বন্দরবাজার-জিন্দাবাজার এই সড়কের দুই পাশের ফুটপাত পুরোটাই হকারদের দখলে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার আহমদ বলেন, বর্তমানে সার্বিক পরিস্থিতিতে একটু সমস্যা হতে পারে তবে সেগুলো দ্রæত ঠিক হয়ে যাবে। আমাদের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়মিত অফিস করছেন। রবিবার থেকে আমাদের মোবাইল কোর্ট নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করবে। তখন থেকে হকাররা আর সড়কে বসতে পারবে না। তারা তাদের জয়গায় যেতে হবে।

নির্বাচিত হওয়ার পর মেয়র আনোয়ারুজ্জামান সিলেটকে ক্লিন ও স্মার্ট সিটি গড়ে তুলতে হকার পুনর্বাসনের ঘোষনা দেন। এ নিয়ে সিলেটের ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে আলোচনা করে লালদিঘীপার মাঠকে ব্যবহারের উপযোগী করে তুলে সেখানেই সিলেট নগরের হকারদের পুনর্বাসন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এ জন্য তিনি হকারদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। হকাররাও মেয়রকে সড়কে না বসে মাঠে ব্যবসা করার কথা দেন।
২০২১ সালে হকার পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয় সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ওই বছরের জানুয়ারিতে নগরভবন-লাগোয়া লালদিঘীর পারের খোলা মাঠে হকারদের জন্য অস্থায়ীভাবে পুনবার্সনের ব্যবস্থা করলেন কিন্তু ব্যবসায়ীরা বেশি দিন সেখানে থাকে নি। তার প্রধান কারণ ছিল তাদের রাস্তার সমস্যা ও লাইটিং সমস্যা।

প্রাথমিক অবস্থায় ২০২১ সালে নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১ হাজার ৭০ জন হকারকে পুনর্বাসন করা হয়। তবে দুই বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ভেস্তে যায় হকার পুনর্বাসনের সে উদ্যোগ। আর এখন অনেকটা এলোমেলো মেয়র আনোয়ারুজ্জামানে এই কার্যক্রম।