নিজস্ব প্রতিবেদক :: শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর পরই সিলেটজুড়ে শুরু হয় তাণ্ডব। অনেকের বাসা, বাড়ি, দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়েছে। এ থেকে বাদ যায়নি সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ ৫টি সেতুও। এসব সেতুর টোল প্লাজাগুলোতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। সেজন্য এখনো বন্ধ রয়েছে এসব সেতুর টোল আদায়। ৫ আগস্টের পর থেকে এসব সেতু থেকে কোনো টোল আদায় করা হচ্ছে না। সেতুগুলোতে বিনা টোলেই চলাচল করছে যানবাহন। টোল না দিয়ে সেতু পারাপারের সুযোগ পেয়ে খুশি গাড়ির চালকরা।
টোল প্লাজাগুলো হলো–সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের শেরপুর সেতু, শাহপরান সেতু, সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সেতু, সিলেট বিয়ানীবাজার শেওলা সেতু ও লামাকাজী সেতু।
সরেজমিনে শেরপুর সেতু ঘুরে দেখা যায়, সেখানে কোনো ব্যারিকেড নেই। সংশ্লিষ্ট সেতুর দায়িত্বে থাকা লোকজনও নেই সেখানে। যানবাহনগুলো টোল না দিয়ে ব্যবহার করছে সেতু। টোল ঘরের কলাপসিবল গেইট ভাঙা। এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে বিভিন্ন জিনিসপত্র। এর মধ্যে কয়েকটি টোল ঘরে আগুনের পোড়া ক্ষতও রয়ে গেছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যেভাবে হামলা শুরু হয়েছিল এলাকার লোকজন সেদিন বিক্ষোভকারীদের না দমালে টোল প্লাজার কিছুই অবশিষ্ট থাকত না। একইভাবে ফেঞ্চুগঞ্জ টোল প্লাজায় গিয়ে দেখা যায় হামলার চিহ্ন। তছনছ করা হয়েছে টোল ঘরের ভেতর। লুট করা হয়েছে সেখানে থাকা টাকাও।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দুটি কারণে মানুষের ক্ষোভ থেকে এসব হামালার ঘটনা ঘটেছে। প্রথমত–বিগত সময়ে এসব টোল প্লাজায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। সেতুর টাকা আওয়ামী লীগ নেতা আর সড়ক ও জনপথের কর্মকর্তারা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, কোনো কোনো টোল প্লাজার ইজারার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও টাকা আদায় অব্যাহত ছিল। এসব ক্ষোভ থেকেই টোল প্লাজায় হামলার ঘটনা ঘটে। এখন সাধারণ মানুষ সেতুগুলো টোলমুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, লামাকাজী সেতুর টাকা অনেক আগে উঠে গেছে। সেতু থেকে টোল আদায় বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে চিঠিও দিয়েছেন তারা। তবে কোনো কাজ হয়নি। এখন অন্যায়ভাবে এই সেতু থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ ছাড়া এ নিয়ে এলাকার লোকজনের সঙ্গে প্রায়ই বাগ্বিতণ্ডা হতো সংশ্লিষ্টদের। এসব ক্ষোভ থেকেই অনেকেই টোল প্লাজায় হামলা চালিয়েছে।
ফেঞ্চুগঞ্জ পূর্ব বাজারের ব্যবসায়ী সিতাব খান জানান, ২০ বছর আগে ফেঞ্চুগঞ্জ সেতু নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকে দিনরাত টোল আদায় হয়েছে। এটা সরকারের রাজস্ব আদায়ের উৎস হলেও দীর্ঘদিন ধরে ইজারাদার না থাকায়, আদায়কৃত অর্থে মধ্যস্বত্বভোগীদের পেট ভরেছে।
সিলেট সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন বলেন, বিভিন্ন সেতুর টোল প্লাজায় হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে। এ কারণে টোল আদায় আপাদত বন্ধ রয়েছে। আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সবার সাথে বৈঠক করে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব টোল আদায় শুরু করা হবে।
Editor-in-Chief and Publisher: Mohammed Imran Ali, Executive Editor: Ahmed Ferdous Shakar, News Editor: Ahia Ahmed. E-mail: news.todaysylhet24@gimal.com
www.todaysylhet.com