মৌলভীবাজার প্রতিনিধি :: কুলাউড়ায় ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন যোগদানের পর থেকে নিজেকে সরকারদলীয় লোক পরিচয় দিয়ে বীরদর্পে একের পর এক দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন। ভয়ে অনেকে মুখ না খোললেও সরকার পরিবর্তন হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে স্থানীয় ভুক্তভোগীরা অনেকে বিস্তর অভিযোগ তুলেছেন।
জানা যায়, ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন কুলাউড়ায় প্রথমে ২০১৪ সালে বিট অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। পরে ২০১৯ সালে কুলাউড়া থেকে বদলী হয়ে চলে যান। এর পর ২০২০ সালে পদোন্নতি পেয়ে রেঞ্জ কর্মকর্তা হিসেবে কুলাউড়ায় আবার যোগদান করেন। যোগদানের পরই তিনি সরকার দলীয় প্রভাব কাটিয়ে গত ১০ বছরে ২ দাপে কুলাউড়ায় চাকরি করে তিনি নানা দূর্নীতি কর্মকান্ডে বেপরোয়া হয়ে গাছ পাচার, ঘুষ বাণিজ্য এবং চাঁদাবাজির আকড়ায় পরিনত করেন বন বিভাগের কুলাউড়ার সরকারী অফিসকে। এছাড়াও কুলাউড়া মনছড়া বিটের সেগুন, গর্জন, চাপাতি সহ বিভিন্ন জাতের মুল্যবান কয়েক কোটি টাকার গাছ প্রায় রাতের আধারে কাভার্ড ভ্যানে করে একটি চক্রের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাচার হয়ে থাকে যা রেঞ্জ কর্মকর্তার হাত রয়েছে বলে জানা গেছে।
অপরদিকে কুলাউড়ার ২৭টি অবৈধ করাত কল থেকে মাসোয়ারা হিসেবে কয়েক লক্ষ টাকা করে চাঁদা আদায় করেন তিনি। এসব বিষয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ করলে তাদেরকে মামলার হুমকি দিয়ে ঘুষ এবং চাঁদা বাজির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গত মে-জুন মাস থেকে রেঞ্জ কর্মকর্তা রিয়াজের নির্দেশে উপজেলার বরমচাল বিট অফিসের অদূরে রিজার্ভ ফরেষ্টের প্রায় ২হাজার আকাশ মনি গাছ অবৈধ ভাবে বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। যা পর্যায়ক্রমে এসব গাছ কাটা এখনো চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। স্থানীয় বন প্রহরী রতিন্দ্র নারায়ন, নাজির উদ্দিন নিজে উপস্থিত থেকে কুলাউড়া এবং সিলেটের বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছে এই গাছ গুলো বিক্রি করেন। বিক্রিকৃত গাছের মুল্য প্রায় কোটি টাকা হবে।
বন প্রহরী রতিন্দ্র নারায়ান প্রতিবেদক কে জানান রেঞ্জ কর্মকর্তার নির্দেশে তারা এই গাছ গুলো গাড়ীতে লোড করে দেন। বিষয়টি জানা জানি হলে রেঞ্জার নিজের অপরাধ আড়াল করতে গিয়ে স্থানীয় ইসলাছড়া পুঞ্জির নিরীহ আদিবাসী খাসিয়াদের আসামী করে দুইটি মামলা দায়ের করেন। মামলার ভয়ে অনেক খাসিয়ারা পলাতক রয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কুলাউড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন তাঁর বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার বলেন, এটা মূলত খাসিয়া অধ্যুষিত এলাকা। আমার অফিস থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে বরমচাল বিট অফিস। সেখানে আলাদা বিট অফিসার রয়েছেন। কিছু গাছ কাটা অবস্থায় পাওয়া গেছে সেগুলো সেখানের দায়িত্বরতরা তাদের কাছে রেখেছেন। এর চেয়ে বেশি কিছু জানেন না বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ হুমায়ূন কবির মুঠোফোনে জানান, গাছ কাটার কিছু তথ্য আমাদের কাছে আসার পর সরেজমি গিয়ে স্থানীয় সহ কয়েকজনকে নিয়ে গাছ কাটা রোধে একটি কমিটি গঠন করে দিয়ে আসি। এর পরেও যদি এভাবে রিজাব ফরেস্টের গাছ আমাদের লোকজন বা অন্যরা লুকিয়ে কেটে বিক্রি করে তাহলে আমরা তদন্ত করে অবশ্যই অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সূত্র: সিলেট প্রতিদিন
Editor-in-Chief and Publisher: Mohammed Imran Ali, Executive Editor: Ahmed Ferdous Shakar, News Editor: Ahia Ahmed. E-mail: news.todaysylhet24@gimal.com
www.todaysylhet.com