বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি :: বিয়ানীবাজার পৌরশহরের সুপাতলায় বাসুদেব মন্দির। এটি সপ্তম শতকে প্রতিষ্টা করা হয়। মন্দিরের ভিতরে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন পূণ্যার্থী উপাসনায় ব্যস্থ। তাদের মধ্যে কোন ভীতি নেই বরং কোলাহল নিয়েই প্রার্থণা করছেন দেশে যাতে স্বস্থি ফিরে।
মন্দিরের সেবায়েত নান্নু জানান, সরকার পতনের দিন থেকে কয়েকদফা এলাকার লোকজন-রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আমাদের দেখতে এসেছেন। আমাদের কোন সমস্যা নেই।
তিনি বলেন, মুসলমানরা আমাদের সবধরনের সহযোগিতা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাদের এমন সহায়তায় আমরা কৃতজ্ঞ।
বিয়ানীবাজারের আদিনাম ছিল পঞ্চখন্ড। এখানে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি সুপ্রাচীণ থেকে বহমান। কখনো সাম্প্রদায়িক অস্থিরতার খবর পাওয়া যায়নি। তবে গত কয়েকবছর থেকে নেতৃত্ব নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা ভিতরে-ভিতরে ছোট-ছোট গ্রুপে বিভক্ত।
বাসুদেব মন্দির থেকে একটু দূরে দাসগ্রামে অবস্থিত কালী মন্দির, এর পাশে কালাচাঁদ মিলন মন্দির। সরেজমিন দেখা গেল, সব মন্দির-ই অক্ষত রয়েছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বিদের মধ্যে ধর্মচর্চা নিয়ে কোন উদ্বেগ নেই।
হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা অজিত আচার্য বলেন, বিয়ানীবাজার উপজেলার কোন মন্দির-উপাসনালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেনি। এখানকার হিন্দু লোকরা ভালো আছেন। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সকল কাজে তারা কোন সমস্যায় পড়েননি।
বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি সজীব ভট্রাচার্য জানান, উপজেলার কোথাও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন আক্রান্ত হননি। মুসলমান ভাইয়েরা আমাদের আগলে রেখেছেন। এই জনপদের সম্প্রীতি অনন্য। তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ গুজব ছড়িয়ে হিন্দু ভাইদের মাঠে নামিয়ে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে।’
বিয়ানীবাজার উপজেলায় কমপক্ষে ৫০টি সার্বজনীন মন্দির রয়েছে। সরকার পতনের পর কোন মন্দিরেই ঝামেলা হয়নি। পৌরশহরে অবস্থিত ইসকন মন্দির, চারখাইয়ের দেউলগ্রামে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর মন্দিরসহ আরোও বেশ কয়েকটি বড় মন্দির রয়েছে। স্থানীয় রাজনীতিক নেতৃবৃন্দ, ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, আলেম-ওলামাসহ বিভিন্ন কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ বারবার মন্দিরগুলোর সেবায়েতদের সাথে দেখা করছেন। উপজেলার তিলপাড়া ইউনিয়নের সানেশ্বর বাজারে মন্দিরের পাশঘেঁষে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানেও নিজ-নিজ ধর্মের লোকজন যার-যার ধর্ম চর্চা ও প্রার্থণা করছেন। হিন্দু ধর্মের অনেক শিক্ষার্থী রাস্তায় ট্রাফিকের কাজ করছেন।
বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী শামীম বলেন, ‘আমার এলাকায় কোনো মন্দির বা সংখ্যালঘু বাড়িতে হামলার বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি।’