২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

add

দ্রোহ এবং প্রত্যাশার কথামালার এক অনিন্দ্য চিত্রনাট্য দেয়ালে দেয়ালে

todaysylhet.com
প্রকাশিত ১৩ আগস্ট, মঙ্গলবার, ২০২৪ ২৩:৩৪:২৭
দ্রোহ এবং প্রত্যাশার কথামালার এক অনিন্দ্য চিত্রনাট্য দেয়ালে দেয়ালে

টুডে সিলেট ডেস্ক :: নগরীর দেয়াল আজ রঙেছে অনিন্দ্য সুন্দর গ্রাফিতির আবরণে।মনের মাধুরিতে যতো রং থাকে তার সবটুকু এবং চেতনায় বারুদ হয়ে জ্বলে ওঠা কথামালার ঢালী সাজিয়ে ওরা দেয়ালে দেয়ালে অঙ্কন করেছে অগনিত স্থির চিত্রনাট্য। দ্রোহের সঞ্জিবনীতে জেগে ওঠা যে তরুণ যুবক চরম আত্মত্যাগের সিঁড়ি মাড়িয়ে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে আলোর ভোর, সেই ভোরের পাখিরাই এখনো আগলে রেখেছে প্রিয় দেশ মাতৃকাকে।অপশাসন আর অনিয়মের দানব জগদ্দল পাথর হয়ে বসেছিলো এই দেশে। সেই দানবকে পরাজিত করেছে ওরা। প্রবল চঞ্চল জীবনীশক্তিতে ভরপুর এ তরুণ যুবারা দলবেঁধে গ্রাফিতি অঙ্কনের মাধ্যমে দেয়ালে দেয়ালে তাদের সৃজনশীল প্রত্যাশা ও অভিব্যক্তির নান্দনিক আবহ ফুটিয়ে তোলেছে।

“নতুন বাংলাদেশ ২০২৪”, Be The Light”,” পানি লাগবে পানি”, “আমরা করবো জয়”,” রক্ত গরম মাথা ঠান্ডা “,” এখন নয়তো কখন?”,”বন্ধু আমার নেতা হতে গিয়ে মানুষ হতে ভুলে গেছে”,”শোনো মহাজন,আমরা অনেকজন”, ” বাবা ওই দেখো হেলিকপ্টার “,” সুবোধ ভোর হয়ে গেছে”, “কষ্টের দিন শেষ- আইজ উদ্দিন” ইত্যাদি অসংখ্য সাম্প্রতিক উচ্চারিত শব্দের ঢালী এবং সৃজনশীল চিত্রের সমাহারে তারা ভরিয়ে তোলে নগরীর দেয়াল।

কোটা বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম শহীদ আবু সাঈদ এর বুক চিতিয়ে দাঁড়ানো প্রতিবাদী পোস্টার, শহীদ মুগ্ধ’র স্বাবলীল উচ্চারন “পানি লাগবে পানি” বাংলাদেশের ছাত্র যুব সমাজের অন্তরে যে প্রতিবাদের চেতনা জন্ম দিয়েছিল, সেই চেতনায় বলীয়ান হয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় পরিলক্ষিত হয় দেয়ালিকা অঙ্কনে সম্পৃক্তদের অবয়বে।

“বাংলাদেশ ম্যভরিক্স” এর পৃষ্ঠপোষকতায় মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের ৫৯ ব্যচ এর শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ৯ আগস্ট শুরু হওয়া এ গ্রাফিতি অঙ্কন চলছে সিলেট নগরীতে।এতে সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটি, স্কলার্স হোম, জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ,সহ আরও বেশকিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী অংশ নেয়।

গ্রাফিতির অন্যতম সমন্বয়ক সাদিয়া আহমদ বলেন- “কোটা আন্দোলনে প্রাণ উৎসর্গকারী আমাদের শহীদদের সম্মান জানিয়ে আমরা সৃজনশীল গ্রাফিতি দিয়ে সিলেটের দেয়ালগুলোকে প্রাণবন্ত করে তুলেছি। সাম্প্রতিক এ আন্দোলনটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায়, কারণ সাহসী তরুন যুবারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন, ন্যায্য আচরণ এবং বৈষম্যমূলক কোটা বিলোপের দাবিতে। তাদের সংগ্রাম এবং চূড়ান্ত আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমরা দেশে মুক্তি ও সাম্যের চেতনা সমুন্নত রাখতে সক্ষম হয়েছি”।

সামাজিক সংগঠন, “বাংলাদেশ ম্যাভেরিক্স”-এর প্রতিষ্ঠাতা তামিম উল ইসলাম চৌধুরী সার্বিক সমন্বয়ে পরিচালিত গ্রাফিতি অঙ্কনে অন্যান্যের মধ্যে সক্রিয় ছিলেন আনাস জাফর, পল্লব বাগচি, মেহাম্মদ রাহাত,মোহাম্মদ সেলিম,আহসানুর রহমান আদনান,রায়হান রহমান,রেদওয়ান,ফারহান আহমদ,সৈয়দ হাসান সালমান,মোহাম্মদ সামী প্রমুখ।