শাবি প্রতিনিধি :: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) বেসরকারি কোম্পানি যমুনা স্টার সেইভ গার্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের নিরাপত্তাকর্মীদের তোপের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম। শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলেন, শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে নানান অভিযোগ তুলে যমুনা স্টার কোম্পানির সুপারভাইজার হাবিবুর রহমানকে অবরুদ্ধ করেন নিরাপত্তাকর্মীরা। হাবিবুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসালমকে দোষারোপ করেন। পরে মো. সাইফুল ইসলামকে ডেকে আনেন নিরাপত্তাকর্মীরা। এ সময় তাকেও অবরুদ্ধ করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
বিক্ষুব্ধ নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের দু’জনের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে তাদের মারধর করা হয়। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-১–এ মো. সাইফুল ইসলামকে নিজ কার্যালয়ে আনা হয়। এর আগে কোম্পানি থেকে চাকরিচ্যুত তিনজন নিরাপত্তাকর্মীর চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার সুপারিশপত্র ওই কর্মকর্তার কাছ থেকে নেওয়া হয়। পরে নিরাপত্তাকর্মীরা তার পদত্যাগের দাবি করলে ওই কর্মকর্তা পদত্যাগ করতে রাজি হন এবং রেজিস্ট্রার বরাবর পদত্যাগপত্র লিখে সই করে জমা দেন।
নিরাপত্তাকর্মী মো. জায়েদ আহমেদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন নিরাপত্তা কর্মকর্তা, কোম্পানির সুপারভাইজারসহ একটি সিন্ডিকেট মিলে কোম্পানির নিরাপত্তাকর্মীদের জিম্মি করে রেখেছিলেন। আমাদের দিয়ে তারা তাদের বাসার কাজ পর্যন্ত করিয়েছেন। অমানবিক আচরণ সহ্য করে আমরা ডিউটি করছিলাম।’ নানা অভিযোগ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিনা কারণে চাকরিচ্যুত করা, চাকরিতে এক লাখ টাকা ঘুষ নেওয়া, ঘুষের মাধ্যমে সুবিধাজনক স্থানে ডিউটি দেওয়া, বাসায় কাজ করানো, বেতন দিতে বিলম্ব করাসহ অনেক অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। তাই আমরা আজকে দু’জনকে অবরুদ্ধ করেছি। কয়েকজন সহকর্মী ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের মারধরের চেষ্টা করলে আমরা আটকাই।’
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক সহ-উপাচার্য কবির হোসেন এবং সাবেক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের কাছে একাধিকবার নিরাপত্তা শাখার অনিয়ম ও কোম্পানির অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানান নিরাপত্তাকর্মী মো. জায়েদ আহমেদ।
এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য যমুনা স্টার সেইভ গার্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপারভাইজার মো. হাবিবুর রহমান ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।