নিজস্ব প্রতিবেদক :: কোটা সংস্কার ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশ-শিক্ষার্থী ও জনতার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সিলেটের বিভিন্ন পত্র-পত্র-পত্রিকার সাংবাদিকরা আহত হয়েছেন। পাশাপাশি একজন নিহত হয়েছেন। নিহত সাংবাদিক দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ও দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার সিলেট প্রতিনিধি আবু তাহের মোহাম্মদ তুরাব।
আহত সাংবাদিকরা হলেন- চ্যানেল এস সিলেটের চীফ রিপোর্টার মঈন উদ্দীন মনজু, ক্যামেরা পার্সন শামীম হোসাইন, যুগান্তর সিলেট অফিসের ফটো সাংবাদিক মামুন হাসান, দৈনিক শ্যামল সিলেট পত্রিকার স্টাফ ফটো সাংবাদিক ও বাংলা ভিশন সিলেট অফিসের ক্যামেরা পার্সন মো. আজমল আলী, দৈনিক জাগ্রত সিলেট পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ও নতুন সিলেট পত্রিকার চীফ রিপোর্টার এহিয়া আহমদ, দৈনিক উত্তরপূর্ব পত্রিকার ফটো সাংবাদিক পল্লব ভট্টাচার্য্য, দৈনিক কালবেলার সিলেট প্রতিনিধি মিঠু দাশ জয়, মাল্টিমিডিয়া নিউজপোর্টাল বার্তা২৪.কমের সিলেটের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ও সিলেট প্রতিদিন স্টাফ রিপোর্টার মো. মশাহিদ আলী, দৈনিক শ্যামল সিলেট পত্রিকা ও সিলেট প্রতিদিনের ফটো সাংবাদিক রেজা রুবেল, ফটো সাংবাদিক জাকির আহমদ, সিলেট ভিউ মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার শহীদুল ইসলাম সবুজ, নিবেন্দু তালুকদার নিয়ম।
সাংবাদিক মঈন উদ্দীন মনজু জানান, সিলেটে অসহযোগ আন্দোলনের প্রশত দিনে সকাল থেকেই নগরীর কোর্ট পয়েন্টে পুলিশ-আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার পর সংঘর্ষ শুরু হয়। এসব সংঘর্ষে দায়িত্ব পালনকালে এসময় পুলিশ ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে ছুঁড়া গুলিতে তিনি ও ক্যামেরা পার্সন শামীম হোসাইন এবং দৈনিক যুগান্তর সিলেট অফিসের ফটো সাংবাদিক মামুন হাসান আহত হন।
সাংবাদিক মশাহিদ আলী জানান, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ২ আগস্ট (শুক্রবার) বিকেল ৩টার দিকে একটি মিছিল সিলেট নগরীর সুরমা আবাসিক এলাকা থেকে শাবিপ্রবির প্রধান ফটকে গিয়ে আবার ফিরে যাওয়ার সময় পেছন থেকে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। পরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। আত্মরক্ষার জন্য মশাহিদ মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের আন্ডারগ্রাউন্ডের সামনে দাঁড়িয়ে ভিডিও ধারণ করতে চাইছিলেন। এ সময় হাসপাতালের প্রধান ফটক থেকে পুলিশ গুলি ছোড়ে। এতে মাথায় ছররা গুলি লেগে আহত হন। পরে সহকর্মীরা সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
সাংবাদিক এহিয়া আহমদ জানান, দায়িত্ব পালনকালে ২ আগস্ট ঘটনার দিন আন্দোলনকারীরা শাবিপ্রবির গেটের সামনে অবস্থান নিলে সেখান থেকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেয়। পরে সেখান থেকে আন্দোলনকারীরা আখালিয়ার সামনে আসা মাত্র পুলিশ ও আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। ছাত্র-জনতাকে উদ্দেশ্য করে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল এবং গুলি চালায় এসময় ছররাগুলির মধ্যে দুটি গুলির স্প্লিন্টার তার ডান পায়ে ঢুকে। পরে অফিসে আসার পর রাতে নগরীর ইবনে সিনা হাসপাতালে গিয়ে গুলির স্প্লিন্টার বের করেন। পরবর্তীকালে নগরীর চৌহাট্টায় সংবাদ সংগ্রহকালে ছাত্র-জনতা ও পুলিশের দফায় দফায় সংর্ঘষে পুলিশের ছোঁড়া গুলির ছররা একটি এসে বাম পায়ে ঢুকে। পরে রাতে নগরীর ওয়েসিস হাসপাতালে গিয়ে বাম পা থেকে স্পিøন্টার বের করেন।
ফটো সাংবাদিক রেজা রুবেল জানান, ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় চোহাট্টায় জজ টিলা (জজ ভবন) গেইটের সামনে পুলিশ ছাত্র-জনতা দিকে এলোপাতাড়ি গুলি করলে তখন আমি ছবি-ভিডিও নেওয়ার সময় হঠাৎ আমার ডান পায়ের উরুতে ও ডান হাতে লাগে পুলিশের ছুড়া গুলি লাগে।
সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম সবুজ জানান, দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নগরীর আখালিয়া এলাকায় গুলিবিদ্ধ হই। পরে ওইখান থেকে অফিসে চলে আসি। রাতে হাসপাতালে গিয়ে স্প্লিন্টার বের করি। এখনও গুলির স্থানে ব্যাথা অনুভব করি।
আহত সাংবাদিকর জানান, এখন পর্যন্ত টিয়ারগ্যাসের জন্য সর্দি ও কাশিতে ভূগছেন তারা। পাশাপাশি টিয়ারগ্যাসের জন্য মাঝেমধ্যে বুকে ব্যাথা অনুভব করেন তারা।
Editor-in-Chief and Publisher: Mohammed Imran Ali, Executive Editor: Ahmed Ferdous Shakar, News Editor: Ahia Ahmed. E-mail: news.todaysylhet24@gimal.com
www.todaysylhet.com