বিনোদন ডেস্ক :: আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা, সংস্কৃতি, প্রত্নসম্পদ, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় স্থান, আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো সম্পর্কে জানতে এবং জানাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে ইত্যাদি ধারণ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবারের পর্ব ধারণ করা হয়েছে প্রকৃতির অপরূপ লীলাভূমি দেশের সীমান্ত কন্যা শেরপুরে।
মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে শেরপুরের নালিতাবাড়ি উপজেলার গারো পাহাড় এলাকায় অবস্থিত দৃষ্টিনন্দন মধুটিলা ইকোপার্কে। সীমান্তবর্তী এই সবুজ পার্কের সবুজের সমারোহের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ দিয়ে মোড়ানো মঞ্চে ধারণ করা হয় এবারের ইত্যাদি।
অনুষ্ঠানটির বিভিন্ন পর্ব ধারণ করা হয় জুলাই মাসের শুরুর দিকে। নালিতাবাড়িতে ধারণ হলেও দর্শকরা আসেন ৫০ থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বিভিন্ন উপজেলা থেকেও।
এবারের অনুষ্ঠানে শেরপুরের পালাগানের শিল্পী তারা বয়াতী এবং পান্থ কানাই একটি ভিন্নরকম লোকসংগীত পরিবেশন করেছেন। গানটির কথা লিখেছেন কবির বকুল। এছাড়াও শেরপুরকে নিয়ে মনিরুজ্জামান পলাশের কথায় একটি পরিচিতিমূলক গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেছেন শেরপুরেরই স্থানীয় শতাধিক বাঙালি ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নৃত্যশিল্পী। নাচটির কোরিওগ্রাফি করেছেন কমল কান্তি পাল, কণ্ঠ দিয়েছেন রাজীব ও তানজিনা রুমা। দুটো গানেরই সুর করেছেন হানিফ সংকেত এবং সংগীত আয়োজন করেছেন মেহেদী।
দর্শকপর্বের নিয়ম অনুযায়ী ধারণস্থান শেরপুরকে ঘিরে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে উপস্থিত দর্শকের মাঝখান থেকে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ৪ জন দর্শক নির্বাচন করা হয়। ২য় পর্বে নির্বাচিত দর্শকদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন বৃহত্তর ময়মনসিংহের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী অনিমেষ রায়।
শেকড় সন্ধানী ইত্যাদি সবসময়ই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রচার বিমুখ, জনকল্যাণে নিবেদিত মানুষদের তুলে ধরার পাশাপাশি প্রত্যন্ত অঞ্চলের অচেনা-অজানা বিষয় ও তথ্যভিত্তিক শিক্ষামূলক প্রতিবেদন প্রচার করে আসছে। আর সেই ধারাবাহিকতায় এবারের পর্বেও রয়েছে কয়েকটি হৃদয় ছোঁয়া প্রতিবেদন। রয়েছে শেরপুরের ওপর একটি তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন। শেরপুরের বিভিন্ন দর্শনীয়, আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র ও প্রত্নসম্পদের ওপর প্রতিবেদন ছাড়াও এখানকার জিআই পণ্য তুলসীমালা চাল ও ধান গবেষক চাটকিয়া গ্রামের কৃষক সেন্টু কুমার হাজং এর উপর রয়েছে একটি প্রতিবেদন। সহিদুল ইসলামের এক অপ্রচলিত শখের দুর্লভ সংগ্রহের উপর রয়েছে একটি চমৎকার প্রতিবেদন।
শেরপুরে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। এ বিষয়েই ইত্যাদির এবারের পর্বে রয়েছে একটি তথ্যভিত্তিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। বিদেশি প্রতিবেদন পর্বে রয়েছে চীনের রাজধানী বেইজিং এ অবস্থিত চীনের কেন্দ্রীয় টেলিভিশন ভবন, চায়না টাওয়ার এবং বিশ্বের মহাবিস্ময় চীনের মহাপ্রাচীরের ওপর একটি তথ্যবহুল প্রতিবেদন।
এছাড়াও শেরপুরের মঞ্চে যথারীতি সমসাময়িক বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে রয়েছে নানি-নাতির কথার মাতামাতি। এছাড়াও প্রতিবারের মত এবারও রয়েছে বিভিন্ন সামাজিক অসঙ্গতি ও সমাজ সংস্কারের উপর সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু সরস অথচ তীক্ষ্ণ নাট্যাংশ। নাটক এখন নামে আটক, ফুড ব্লগারদের ভাড়ামি, প্রেমে ভিউর প্রভাব, ভিক্ষাবৃত্তিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ, স্বামীর অবৈধ আয়ের দায়, দুর্নীতির গতি ও নীতির দুর্গতি, চোরের মন ছাগল ছাগল, স্বামী চেনার সহজ উপায়, মুখোমুখি দাতা ও গ্রহীতাসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর রয়েছে বেশ কয়েকটি নাট্যাংশ।
এবারের ইত্যাদিতে উল্লেখযোগ্য শিল্পীরা হলেন-সোলায়মান খোকা, জিয়াউল হাসান কিসলু, সুভাশিষ ভৌমিক, মাসুম বাশার, জিল্লুর রহমান, শবনম পারভীন, আঞ্জুমান আরা বকুল, আমিন আজাদ, মুকিত জাকারিয়া, আনন্দ খালেদ, তারিক স্বপন, জামিল হোসেন, জাহিদ শিকদার, সাদিয়া তানজিন, আনোয়ারুল আলম সজল, বেলাল আহমেদ মুরাদ, সঞ্জীব আহমেদ, সিয়াম নাসির, নিপু, কামাল বায়েজিদ, সাবরিনা নিসা, নাদিয়া হক, সুর্বনা মজুমদার, মতিউর রহমান, আনোয়ার শাহী, বিণয় ভদ্র, বিলু বড়ুয়া, সুজাত শিমুল, তাসনোভা নিঝুমসহ আরো অনেকে।
বরাবরের মত এবারও ইত্যাদির শিল্প নির্দেশনা ও মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন ইত্যাদির নিয়মিত শিল্প নির্দেশক মুকিমুল আনোয়ার মুকিম। পরিচালকের সহকারী হিসাবে ছিলেন যথারীতি রানা সরকার ও মোহাম্মদ মামুন। ইত্যাদির এই পর্বটি একযোগে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে প্রচারিত হবে আগামী শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানটির প্রচার তারিখ গেল ২৬ জুলাই থাকলেও বিদ্যমান পরিস্থিতির কারণে অনুষ্ঠানটির প্রচার করা হয়নি। ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন।
Editor-in-Chief and Publisher: Mohammed Imran Ali, Executive Editor: Ahmed Ferdous Shakar, News Editor: Ahia Ahmed. E-mail: news.todaysylhet24@gimal.com
www.todaysylhet.com