টুডে সিলেট ডেস্ক :: বয়স খুব বেশি নয়। এরইমধ্যে চোরাচালানে নাম সীমান্ত জুড়েই আলোচিত। রায়হান হত্যার পুলিশ কর্মকর্তা সাবেক এসআই আকবর থেকে শুরু করে সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। সবখানেই তাদের নাম। ভারতে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের পাচারের ঘটনায় সম্প্রতি সময়ে বেশি করে আলোচিত হচ্ছে তাদের নাম। নাম আসার পর গা ঢাকা দিয়েছে তারা। বলা হচ্ছে; ওরাও আত্মগোপনে চলে গেছে।
সীমান্ত এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর কানাইঘাট সীমান্তের একাধিক দুর্গম এলাকা দিয়ে চোরাকারবারি ও দালালদের মাধ্যমে নিরাপদে ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে সিলেটের অনেক নেতা ভারতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। বিশেষ করে ৫ই আগস্ট সরকার পতনের পর দেশের অবস্থা খারাপ থাকায় নিরাপত্তাজনিত কারণে সীমান্ত এলাকায় বিজিবি’র টহল জোরদার কয়েকদিন না থাকার কারণে ৭ ও ৮ই আগস্ট ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতা একটি প্রভাবশালী চক্রের সহায়তায় মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেনের মাধ্যমে চোরাকারবারি দালালদের মাধ্যমে কানাইঘাটের ডোনা ও সুরইঘাট সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে নিরাপদে চলে যান বলে সীমান্ত এলাকার অনেকে বলেছেন। বিশেষ করে গত ২৩শে আগস্ট কানাইঘাট ডোনা মিকিরপাড়া ভারতীয় সীমান্তের অভ্যন্তর থেকে দেশের আলোচিত সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আটক করা হয়।
প্রভাবশালী একটি চক্রের মাধ্যমে শামসুদ্দিন মানিক কানাইঘাটে আসেন সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার জন্য। এই চক্রের মাধ্যমে আলাপ-আলোচনা করার পর বিচারপতি মানিককে ভারতের গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দেয়ার জন্য ২১শে আগস্ট দনা সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত বড়চাতল গ্রামের মৃত ফারুক আহমদের পুত্র রাজু আহমদ, খাচারীপাড়া গ্রামের মৃত লেদু মিয়ার পুত্র সিরাজ উদ্দিন, একই গ্রামের খলিল মিয়ার পুত্র ছাব্বির আহমদ, রফিকুল ইসলামের পুত্র সাদ্দাম, তোতা মিয়ার পুত্র আব্দুল কাইয়ুমকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়। ওইদিন রাতেই চোরাকারবারি রাজু, সিরাজ, সাদ্দাম ও কাইয়ুম মিলে সীমান্তবর্তী মিকিরপাড়া এলাকায় ভারতের পানি নিষ্কাশনের কালভার্টের নিচ দিয়ে বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিককে ভারতে নিয়ে যায়।
বিষয়টি দনা বিজিবি ক্যাম্পের কর্মকর্তারা জানার পর যারা শামসুদ্দিনকে ভারতে নিয়ে গেছে তাদের পরিবারের কয়েক সদস্যকে ডোনা ক্যাম্পে নিয়ে আসেন বিজিবি সদস্যরা। তারা ভারতে নিয়ে যাওয়া ওই ব্যক্তিকে ফিরিয়ে দেশে আনার জন্য পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করলে বিচারপতি মানিককে একদিন ভারতের দুর্গম এলাকায় কলা পাতার বিছানা করে রাখা হয়।
বিচারপতি মানিক আটক হওয়ার একদিন পর ২৪শে আগস্ট রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ নেতা ইছহাক আলী খান পান্না’র লাশ কানাইঘাট সীমান্তের ওপারে পড়ে রয়েছে এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে আলোচনায় চলে আসে কানাইঘাটের সীমান্ত এলাকার নাম। এ ছাড়াও সুরাইঘাটের সোনাতনপুঞ্জি সীমান্ত এলাকার কয়েকজন জানিয়েছেন সরকার পতনের পর থেকে একাধিক ব্যক্তি সোনাতনপুঞ্জি সীমান্ত দিয়ে দালালদের মাধ্যমে ভারতে পালিয়ে গিয়েছেন।
ওই চক্রের সদস্যরা স্থানীয় চোরকারবারিদের টাকার বিনিময়ে মানুষদের নিরাপদে ভারতে পৌঁছে দিয়ে থাকে। তাদের মধ্যে রয়েছেন, দনা রাতাছড়ার সিরাজ উদ্দিনের ছেলে আলতাফ হোসেন, দনা বাঙালি পাড়ার ময়না মিয়ার ছেলে আলী হোসেন, রাজু আহমদ, দনা ৯ নম্বরের আব্দুল মুতাল্লিমের ছেলে মাজহারুল, আব্দুল করিমের ছেলে লোকমান আহমদ, রাতাছড়ার মুজাম্মিলের ছেলে আব্দুল আহাদ, দনা পাতিছড়ার আলাউদ্দিনের ছেলে আছুম, মিকিরপাড়ার আব্দুল খালিকের ছেলে আব্দুস শহীদ, একই গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে সুমন আলী, দনা খাছারিপাড়ার লেদু মিয়ার ছেলে সিরাজ উদ্দিন, খসরু মিয়ার ছেলে রাজ, দনা পাতিছড়ার আলাই মিয়ার ছেলে মাসুম, একই গ্রামের রফিকুল হকের ছেলে সাদ্দাম, দনা বাজারের পাশের বাসিন্দা রহিম উদ্দিন ও জুবায়ের আহমদ, সোনাতনপুঞ্জি গ্রামের ফয়জুল হকের ছেলে জাকারিয়াসহ আরও অনেকে। সূত্র: মানবজমিন
Editor-in-Chief and Publisher: Mohammed Imran Ali, Executive Editor: Ahmed Ferdous Shakar, News Editor: Ahia Ahmed. E-mail: news.todaysylhet24@gimal.com
www.todaysylhet.com