টুডে সিলেট ডেস্ক :: ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও দুটি হত্যা মামলা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শ্রমিকদলের কর্মী রিয়াজুল তালুকদার ও ১৪ বছরের কিশোর মাহমুদুল হাসান জয় হত্যার ঘটনায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে (সিএমএম) দুটির আবেদন হয়।
মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেন দুই বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলার আরজি যাত্রাবাড়ী থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। এই দুটি মামলাসহ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা দাঁড়াবে ১৫২টিতে। এর মধ্যে ১৩৬টিই হত্যা মামলা।
রিয়াজুল তালুকদারের নিহতের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ১৩৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ মামলার আবদন করেছেন নিহতের ভাই রুবেল তালুকদার। আর কিশোর মাহমুদুল হাসান জয় নিহতের ঘটনায় মামলা করেছেন নিহত কিশোরের পূর্বপরিচিত দাবি করা রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার সাত মসজিদ হাউজিংয়ের বাসিন্দা মো. রবিউল আউয়াল। এ মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৩৭ জন আসামি।
মাহমুদুল হাসানের মামলায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, তার স্ত্রী ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদের, হামিম গ্রুপের স্বত্বাধিকারী ও সাবেক সংসদ সদস্য এ কে আজাদ এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রংধনু গ্রুপের স্বত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম রফিক, শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ও আসামি।
রিয়াজুল নিহতের মামলায় উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সংসদ সদস্য মশিউর রহমান মোল্লা সজল, সাবেক পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, নাহিম রাজ্জাক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক। এছাড়া মামলায় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের আরো ৩৫০ থেকে ৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট বিকাল ৫টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানার চার রাস্তার মোড়ে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা এক দফা আন্দোলনের সমর্থনে মিছিল করছিল। সে সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগের সব অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী অবৈধ অস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে হাজার হাজার ছাত্র-জনতার উপর গুলি চালায়। এসময় যাত্রাবাড়ী থানার শ্রমিকদল কর্মী মো. রিয়াজুল তালুকদার গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করে।
কিশোর মাহমুদুল হাসান জয়ের মৃত্যুর মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন— সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, হাসান মাহমুদ, জোনায়েদ আহমেদ পলক, মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিবি প্রধান হারুন অর রশীদ প্রমুখ।
মাহমুদুলের মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ১৪ বছরের কিশোর মাহমুদুল হাসান জয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় সদস্য ছিল। গত ৫ আগস্ট তিনি ছাত্র আন্দোলনের ডাকা মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচিতে যোগদান করেন। ওই দিন সকাল ১১টায় যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া ব্রিজের কাছে পৌঁছালে অন্যান্যদের সঙ্গে মাহমুদুল হাসান জয়ও গুলিবিদ্ধ হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে দুপুর ২টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।