১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

add

যেকোনো সময় ভাঙতে পারে শাহজিবাজার ও চানপুর ব্রিজ

todaysylhet.com
প্রকাশিত ১৪ সেপ্টেম্বর, শনিবার, ২০২৪ ২১:২০:৫৮
যেকোনো সময় ভাঙতে পারে শাহজিবাজার ও চানপুর ব্রিজ

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :: হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি চা বাগান ‘লাল চান্দ চা বাগান’ শাহজীবাজার দিকে এলজিইডি প্রধান সড়কে বালু ট্রাকের চাপে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু মাঝখানে পাকা ঢালাই ছানি নিচের অংশে ভেঙে পড়ে। এতে বাগানের পরিবহন চলাচল দুর্ভোগে এবং প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা চা-পাতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নে অধীনস্থ দেউন্দি টি কোম্পানি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী চা শিল্প প্রতিষ্ঠান। প্রতিবছর এ কোম্পানি থেকে সরকারের কোষাগারে প্রচূর পরিমাণ রাজস্ব জমা হয়। উক্ত দেউন্দি চা বাগান ‘লাল চান্দ চা বাগান’ মাধবপুর উপজেলার শাহজীবাজার মহাসড়কে যোগাযোগের একমাত্র এলজিইডি প্রধান সড়ক অতিক্রম করে আসছে উক্ত বাগানের মালামাল।

ফলে এই বাগানের উপর দিয়ে এলজিইডি প্রধান সড়কের বিভিন্ন স্থানে অনেক ছোট বড় সেতু ও কালভার্ট দীর্ঘ দিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ থাকলে ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী (এলজিইডি) কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ না থাকায় দেউন্দি চা বাগানের কারখানা অর্ধ কিলোমিটার দূরে লাল চান্দ চা বাগানের পথে বালু ট্রাকের চাপে সেতু ব্রিজের মাঝখানে ঢালাই ছানি নিচের অংশে ভেঙে পড়েছে।

২০২২ সালে উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী (এলজিইডি) কর্তৃপক্ষ দেউন্দি চা বাগানের ৮ ও ১০ নং সেকশনে নির্মিত সেতু নামে মাত্র নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে সেতু নির্মাণ করে। প্রতিদিন রাতে বালু বাহী ট্রাক, ড্রাম ট্রাক, ডায়না ট্রাক ও ট্রাক্টর বাগানের সেতু উপর দিয়ে প্রতিদিন চলাচলের কারণে প্রতিটি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। গত আগষ্ট মাসে অতিরিক্ত বৃষ্টি পাহাড়ি ঢলে সেতু ব্রিজ আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় চা বাগানের পরিবহন চলাচলে বিপাকে পরেছে বাগান কর্তৃপক্ষ। দেউন্দি চা বাগান সহকারী ব্যবস্থাপক দেবাশীষ এ প্রতিনিধিকে জানান, দেউন্দি চা বাগান-লাল চান্দ চা বাগান- শাহজীবাজার দিকে ছোট-বড় অনেক সেতু ও কালভার্ট রয়েছে কিন্তু অনেকগুলো ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে ।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে ও ২০২১ সালে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলো পূর্ণ নির্মাণ করার জন্য জেলা প্রশাসক, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগ (এলজিইডি) কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবরে আবেদন ও অনুলিপি দিয়ে অবগত করা হয়েছে। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী কর্তৃপক্ষ দেউন্দি চা বাগানের ৮ ও ১০ নং সেকশনে নির্মিত করে দিলে কিছু দিন যেতে না যেতেই আবারো সেতু ব্রিজ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। আবার ও বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হলেও তদারকি নেই। উক্ত বাগানের প্রধান সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার চা শ্রমিক, শাল টিলা রেঞ্জ ফরেস্টার এবং বিভিন্ন মহল্লার নারী-পুরুষসহ স্কুল-শিক্ষার্থীরা চলাচলের একমাত্র সড়ক। এতে বিভিন্ন মহল্লা থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি এই দেউন্দি চা বাগান-লাল চান্দ চা বাগান- শাহজীবাজার প্রধান সড়ক পথে দীর্ঘ দিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু মাধ্যমে পরিবহন চলাচল করে যাচ্ছে।

এদিকে বর্তমান চা মৌসুমে প্রতিদিন চা তৈরির প্রধান কাঁচামাল সবুজ কাঁচা পাতা দেউন্দি ফাঁড়ি বাগানে রঘুনন্দন থেকে দেউন্দি চা কারখানায় এনে কাঁচাপাতা প্রক্রিয়াজাত কারণের জন্য বাগানের এই সেতু উপর দিয়ে ট্রাক্টর পরিবহন করা হয়। এমন কি লাল চান্দ চা বাগান থেকে সবুজ কাঁচাপাতা যায় ট্রাক্টর বহনে এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু উপর দিয়ে দেউন্দি চা কারখানায় নিয়ে আসা হয়।

চা বাগান শ্রমিক বাউরী সূত্রে আরও জানা যায়, দেউন্দি চা বাগান কর্তৃপক্ষ মাঝে মধ্যে এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু হালকা মেরামত করে বাগানের মালামাল পরিবহন করার জন্য সেতু রক্ষা করে আসছে। বর্তমানে দেউন্দি চা বাগান-লাল চান্দ চা বাগান-শাহজীবাজার পথে দেউন্দি চা কারখানা অর্ধ কিলোমিটার দূরে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু উপর দিয়ে প্রতিদিন রাতের আধারে বালু বাহী ট্রাক, ড্রাম ট্রাক, ডায়না ট্রাক ও ট্রাক্টর পরিবহন চলাচল করছে। এ-সব বালু পাহাড়ি ছড়ার বালু ঢেউয়াতলী, গাদাছড়া, কালি নগর এলাকা থেকে উওোলন করে আনা হয়। চলতি মাসে রাতের আধারে দেউন্দি চা কারখানা অর্ধ কিলোমিটার দূরে ৮ ও ১০ নং সেকশনের সামনে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু উপর দিয়ে বালু বাহী ট্রাক চাপে সেতু মাঝখানে ঢালাই ছানি নিচের অংশে ভেঙে পড়ে পানিতে। বাগান কর্তৃপক্ষ বালু বাহী ট্রাক চালককে বাঁধা দিলেও চালকরা কোনো বাঁধা মানছেন না। দেউন্দি চা বাগান ও লাল চান্দ চা বাগানে বিপাকে পরেছে সবুজ কাঁচাপাতা পরিবহন ও অন্যান্য মালামাল পরিবহন চলাচল নিয়ে।

এ ব্যাপারে দেউন্দি চা বাগান-লাল চান্দ চা বাগান-শাহজীবাজারে প্রধান সড়কের ভেঙে যাওয়া সেতু ব্রিজ দ্রুত ভাবে মেরামত করার জন্য জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী কর্তৃপক্ষের কাছে চাহ শ্রমিকরা দাবী জানান।