১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

add

এখনো সাদাপাথরে বন্ধ হয়নি আ.লীগের চাঁদাবাজি

todaysylhet.com
প্রকাশিত ১৮ সেপ্টেম্বর, বুধবার, ২০২৪ ১৮:২১:২৫
এখনো সাদাপাথরে বন্ধ হয়নি আ.লীগের চাঁদাবাজি

ইউএনও’কে অভিযোগপত্র প্রদান

কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি :: সিলেটের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র ভোলাগঞ্জের সাদাপাথরে শুরু থেকে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছে ভোলাগঞ্জ গ্রামের আলমগীর হোসেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে পারেনি। পর্যটন, পাথর কিংবা ট্রাক ব্যবসা সব জায়গা থেকে চাঁদা নিত সে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও থেমে নেই তার চাঁদাবাজি। গত শুক্রবার সাদাপাথরের এক পর্যটন ব্যবসায়ী চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় ওই ব্যবসায়ীকে মারধর ও মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা ওই ব্যবসায়ী তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এছাড়াও সাদাপাথর লুটপাট করায় গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেছে।

এসব ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার সাদাপাথর পর্যটনের ব্যবসায়ীরা তার বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবিদা সুলতানার বরাবর একটি অভিযোগ পত্র দেন। এসময় চাঁদাবাজ মুক্ত করে ব্যবসার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ইউএনওর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

অভিযোগে উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে সাদাপাথর পর্যটন এলাকার সরকারি খাস জমি থেকে দীর্ঘদিন যাবৎ ভোলাগঞ্জ গ্রামের আলমগীর হোসেন ও তার দলবল চাঁদাবাজি করে আসছে। ভোলাগঞ্জ সাদাপাথরে সরকারি জায়গায় নির্মিত প্রতিটি দোকান থেকে ২ থেকে ৪ হাজার টাকা মাসিক চাঁদা, ভোলাগঞ্জ ১০ নম্বর এলাকার বোল্ডার পাথর ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রতিদিন ৫ হাজার টাকা এবং এই পাথর বহনকারী ট্রাকের আকার ভেদে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা চাঁদা নিচ্ছে সে। জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজির রাজত্ব তৈরি করা আলমগীরের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই মামলা-হামলা কিংবা মারধরের শিকার হতেন। গত ৪ বছর সে পর্যটনের ব্যবসায়ীদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রতিটি দোকান থেকে চাঁদা আদায় করেছে। সরকারের পতনের পর সরকারি খাস জমিতে আর চাঁদা দেবে না বলে প্রতিবাদ করলে আলমগীর তার সঙ্গীয় দলবল নিয়ে পর্যটনের ব্যবসায়ীদের উপর হামলা করে। চাঁদা না দেওয়ায় গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সাদাপাথর পর্যটন এলাকার বন্ধু কসমেটিক্স শপের ব্যবসায়ী ও সাদাপাথর ব্যবসায়ী সমিতির দফতর সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম খোকনের উপর হামলা করে তাকে আহত করে এবং মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে আলমগীর ও তার দলবল। এ ঘটনায় আশরাফুল ইসলাম বাদী হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এর আগেও তিনি তার দলবল নিয়ে পর্যটন এলাকার দোকানপাট ভাঙচুর করে।

ব্যবসায়ীরা জানান, আলমগীরকে চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে সে যে কারো উপর হামলা চালায়। দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে সরকারি খাস জমিতে নির্মিত পর্যটনের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে। কেউ দিতে অস্বীকার করলে তাকে মারধর ও দোকানপাট ভাঙচুর করে সে। এ বিষয়টি প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে।

চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আলমগীর হোসেনের ফোনে কল দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সাদাপাথর পর্যটন ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সফাত উল্লাহ জানান, আমাদের পর্যটনের ব্যবসায়ীকে মারধরের বিষয়টি ইউএনওকে লিখিত জানিয়েছি ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানিয়েছি। তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদিউজ্জামান জানান, ব্যবসায়ীর দায়ের করা মামলায় আমরা জড়িতকে ধরতে অভিযান চালাচ্ছি। তদন্ত করছি এখানে কারা চাঁদাবাজি করে। আমি নতুন হওয়ায় এর আগে এরকম অভিযোগ পাইনি।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবিদা সুলতানা জানান, পর্যটনের দোকানপাট সরকারি জায়গায়। এখান থেকে কেউ চাঁদাবাজি করার সুযোগ নেই। ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেছি তারা যাতে কাউকে চাঁদা না দেয়।