নিজস্ব প্রতিবেদক :: নগরীর খাসদবীরে পূর্ব বিরোধের জের ধরে এক মহিলাকে হামলা করেছে তারই মেয়ের শশুর বাড়ির লোকেরা। ৩০ আগস্ট শুক্রবার বিকেলে সাড়ে ৪ টায় নগরীর খাসদবীর এলাকার সৈয়দ রাশেদ আলীর বাসায় এঘটনা ঘটে। আহত মহিলা খাসদবীর এলাকার মৃত সৈয়দ জুবের আলীর স্ত্রী সৈয়দা রেহেনা বেগম (৫৬)। এঘটনায় এসএমপি'র এয়ারপোর্ট থানায় একটি অভিযোগ করেন আহত মহিলা। হামলাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশেরও কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে মহিলা অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, আহত মহিলা সৈয়দা রেহেনা বেগম খাসদবীরের সৈয়দ রাশেদ আলীর (মহিলার দেবর) বাসায় থাকেন এবং রাশেদ আলীর বাচ্চাদের দেখাশোনা করেন। রেহেনা বেগমের মেয়ে নিপা ইংল্যান্ডে বসবাস করে। নিজের ভিটেমাটি বিক্রি করে রেহেনা বেগম মেয়ে নিপা এবং তার স্বামীকে তিনি ইংল্যান্ডে পাঠিয়ে আজ নিঃস্ব হয়ে অন্যের বাড়িতে কাজ করে জীবন কাটাচ্ছেন। ইংল্যান্ডে যাবার পর নিপাকে তার স্বামী জুবেল শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে, এমনকি নিপার গর্ভে থাকা নিজের সন্তানকে হত্যা করার চেষ্টা করে। এ কারণে সেই দেশের সরকার নিপাকে তাদের হেফাজতে নিয়ে নেয় এবং নিপার স্বামীকে ধরে নিয়ে যায়।
কয়েক মাস পর নিপার একটি মেয়ে সন্তান হয়। বর্তমানে নিপা এবং তার মেয়ের ভরনপোষণ করছে ইংল্যান্ড সরকার। পরে নিপার এই বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য রাশেদ আলীর বাসায় তার মা রেহেনা বেগমের সাথে বৈঠক করে নিপার শশুড় বাড়ির লোকজন। নিপার মা রেহেনা বেগম তাদের জানান বিষয়টি ইংল্যান্ডের সরকার দেখছে, তারা এর বিচার করবে। একারণে নিপার শশুড় বাড়ির লোকেরা নিপার মাকে হত্যা ও গুম করার হুমকিও দেয়।
একইভাবে গত ৩০ আগস্ট শুক্রবার বিকেলে সাড়ে ৪ টায় খাসদবীরের সৈয়দ রাশেদ আলীর বাসায় হঠাৎ আসেন নিপার শাশুড়ী নেহারুন্নেছা, জুবেলের দুলাভাইসহ আরও ক'জন সৈয়দা রেহেনা বেগম সাথে দেখা করার জন্য। রেহেনা বেগম তাদের আবারও জানান, বিষয়টি তার হাতে নেই। ইংল্যান্ড সরকার এর বিচার করবে। তিনি কিছুই করতে পারবেন না। একথা শুনার সাথে সাথে জুবেলের দুলাভাই ও তার মা রেহেনা বেগমকে অতর্কিত হামলা করে। এসময় মহিলার চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হলে তারা চলে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ির লোকজন রেহেনা বেগমকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা করান।
আহত সৈয়দা রেহেনা বেগম জানান, আমি অসহায় একজন বৃদ্ধ মহিলা। আমার মেয়ের সাথে প্রবাসে তার স্বামীর ঝামেলা হয়েছে। অতীতে আমার মেয়ের শশুর বাড়ির লোকেরা তাদের ঝামেলার বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য আমাকে গুম এবং হত্যা করার হুমকি দিয়েছিলো। বিষয়টি এলাকাবাসী ও স্থানীয় কাউন্সিলর অবগত রয়েছেন। আর এখন সরকার বদলের পর তারা আমার উপর হামলা করেছে। পরে এই বাসার লোকজন আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান। এখনও আামার শরীরের হাতের হাড়ে ব্যাথা করে। এ বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগ করেছি। তাীা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ কোনো তদন্ত করছে না। আমি এর বিচার দাবি করছি বর্তমান সরকারের কাছে।
বিষয়টি জানতে নিপার শাশুড়ী নেহারুন্নেছা, জুবেলের দুলাভাইয়ের মোবাইলে একাধিক বার কল করলেও তারা কল রিসিভ করেন নি!
এসএমপি'র এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিছুর রহমান জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরে দেশের সব জেলার পুলিশের কার্যক্রম বন্ধ ছিলো। গত ২০ সেপ্টেম্বর একজন মহিলার উপর হামলার অভিযোগ এসেছে। যতটুকু জেনেছি এই মহিলার কেউ নেই। ছেলেরাও কোনো খবর নেয় না। আমি এই থানায় নতুন। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখবো।
Editor-in-Chief and Publisher: Mohammed Imran Ali, Executive Editor: Ahmed Ferdous Shakar, News Editor: Ahia Ahmed. E-mail: news.todaysylhet24@gimal.com
www.todaysylhet.com