আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্রদের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এমনকি সর্বশক্তি দিয়ে লেবাননে হামলা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলের যুদ্ধাংদেহী এই নেতা।
আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার শান্তি আসার পরই তা প্রত্যাখ্যান করেছে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। এমনকি লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরে বোমা হামলাও করেছে। তাছাড়া ইসরায়েল সীমান্তের নিজস্ব অংশে ইসরায়েলি সেনা স্থল আক্রমণের অনুকরণে একটি মহড়া চালিয়েছে।
জাতিসংঘে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সেনাবাহিনীকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
নেতানিয়াহুর এক্স অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যুদ্ধবিরতির খবর সত্য নয়।’ নেতানিয়াহুর দপ্তর বলেছে, ‘তিনি এই প্রস্তাবের কোনো জবাবও দেননি। ইসরায়েলি বাহিনীগুলোকে দেওয়া পরিকল্পনা অনুযায়ী সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।’
নেতানিয়াহু সরকারের কট্টরপন্থীরা বলেছেন, ইসরায়েলের উচিত সকল যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে, আত্মসমর্পণ না করা পর্যন্ত হিজবুল্লাহর ওপর হামলা চালিয়ে যাওয়া।
ইসরায়েলি সেনা জানায়, ইসরায়েলের প্রধান লক্ষ্য উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত সুরক্ষিত করে, হাজার হাজার ইসরায়েলি নাগরিককে ফিরিয়ে আনা। ইসরায়েলের সপ্তম ব্রিগেডের মহড়া লেবানন সীমান্ত থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সূত্র রয়টার্সকে জানায়, ইসরায়েলি সেনা বৈরুতে সুনির্দিষ্ট হামলা চালিয়েছে। হিজবুল্লাহর শক্ত ঘাঁটি দক্ষিণ শহরতলিতে হিজবুল্লাহর এক জ্যেষ্ঠ নেতাকে লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদে ফিরিয়ে এনে ইসরায়েলের বিজয় ছিনিয়ে না আনা পর্যন্ত আমরা আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব।
এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এমএসএনবিসিকে বলেন, যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে ইউরোপসহ সারা বিশ্ব এ অঞ্চলের পক্ষে স্পষ্টভাবে কথা বলছে।
তিনি আরও আজ বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করার কথাও জানান।
যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও তার মিত্র দেশগুলো ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে ২১ দিনের যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘে তীব্র আলোচনার পর তারা গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষেও সমর্থন ব্যক্ত করেন।
গত সোমবার থেকে হিজবুল্লাহর সাথে গোলাগুলির পর লেবাননে ৬০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে।
হিজবুল্লাহ প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের বাণিজ্যিক কেন্দ্র তেল আবিবসহ সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে অসংখ্য ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। যদিও ইসরায়েলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম।
দ্রুত যুদ্ধবিরতি নিশ্চিতের ব্যাপারে ইতিবাচক আশা প্রকাআশ করে লেবাননের নেতা মিকাতি জানান, তার তত্ত্বাবধায়ক প্রশাসনে হিজবুল্লাহর নির্বাচিত মন্ত্রীরা রয়েছেন, যারা লেবাননের সবচেয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তি।
গত বুধবার ইসরায়েলের সেনাপ্রধান লেবাননে স্থল হামলার সম্ভাবনা সম্পর্কে স্পষ্ট জানিয়ে, সীমান্তের নিকটবর্তী সৈন্যদের প্রস্তুত থাকতে বলেছেন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, সিরিয়া থেকে হিজবুল্লাহর কাছে অস্ত্র হস্তান্তর ঠেকাতে লেবানন-সিরিয়া সীমান্তে বৃহস্পতিবার যুদ্ধবিমান হামলা চালানো হয়েছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, রাতভর ও দিনভর হামলায় লেবাননে নিহত হয়েছে ২৬ জন, যাদের বেশিরভাগই বেকা উপত্যকার ইউনাইন শহরের অবস্থান করছিলেন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, সকালে তারা বেশ কিছু এলাকায় হিজবুল্লাহর যোদ্ধা, সামরিক ভবন ও অস্ত্র গুদামসহ বেশকিছু লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। পশ্চিম গালিলি এলাকার দিকে প্রায় ৪৫টি প্রজেক্টাইল নিক্ষেপ করা হয়, যার মধ্যে কয়েকটি বাধা প্রতিরোধ করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে লেবাননজুড়ে পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণে বহু মানুষ নিহত হয়। হিজবুল্লাহ সদস্যসহ আহত হয় আরও হাজার হাজার মানুষ। তারপরেই এই বোমা হামলা চালানো হয়।
Editor-in-Chief and Publisher: Mohammed Imran Ali, Executive Editor: Ahmed Ferdous Shakar, News Editor: Ahia Ahmed. E-mail: news.todaysylhet24@gimal.com
www.todaysylhet.com