মৌলভীবাজার প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগে এক শিক্ষককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পরে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে এ শিক্ষককে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত শিক্ষকের নাম গোপেন্দ্র চন্দ্র শর্মা (৪২)। তিনি হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার ১০ নম্বর মিরাশী ইউনিয়নের রাকি গ্রামের মৃত শ্যামা চরণ শর্মার ছেলে।
যৌন হয়রানীর শিকার ওই ছাত্রীর মা জানান, তার মেয়ে শ্রীমঙ্গল শহরের উদয়ন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। শহরের ডাক বাংলো পুকুরপাড়স্থ জনৈক মুজিব মিয়ার বাসার নীচতলায় টেকনিক কোচিং একাডেমি নামের একটি কোচিং সেন্টারে তার মেয়ে প্রায় এক বছর যাবত কোচিং করছে। গত শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে তার মেয়ে কোচিং সেন্টারে যায়। পড়াবস্থায় শিক্ষক গোপেন্দ্র চন্দ্র শর্মা ওই শিক্ষার্থীর শরীরের স্পর্শকাতর অংশে ও পিঠে হাত দিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন। তখন মেয়েটি চিৎকার করে সহপাঠীদের বিষয়টি জানায়। পাশাপাশি মোবাইল ফোনে সে তার মাকে বিষয়টি জানালে তার মা কোচিং সেন্টারে গিয়ে অন্যান্য শিক্ষার্থীর সাথে আলাপ করে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হন। পরে তিনি বাদি হয়ে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে শ্রীমঙ্গল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ দায়েরের পর প্রাথমিক তদন্ত শেষে পুলিশ মামলা গ্রহণ করে এবং অভিযুক্ত শিক্ষক গোপেন্দ্র চন্দ্র শর্মাকে গ্রেফতার করে রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মৌলভীবাজার আদালতে প্রেরণ করে। পরে আদালত ওই শিক্ষককে কারাগারে প্রেরণ করেন।
শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিনুল ইসলাম জানান, ভুক্তভোগী মেয়েটির মা বাদি হয়ে মামলা দায়েরর পর শহরের কলেজ রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে শিক্ষক গোপেন্দ্র চন্দ্র শর্মাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত আসামি কোচিংয়ে ছাত্রীদের পড়ানোর আড়ালে দীর্ঘদিন থেকে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করে আসছিলো বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন যাবত মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল শহরের কলেজ রোডে সপরিবারে বসবাস করে টেকনিক কোচিং একাডেমী নামের একটি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করে আসছেন গোপেন্দ্র চন্দ্র শর্মা। এর আগে তিনি শ্রীমঙ্গল শহরের উদয়ন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৪ সালে ওই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করার কারণে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান ও বিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়।