টুডে সিলেট ডেস্ক :: ময়মনসিংহ বিভাগের নদ-নদীগুলোর পানির সমতল বিপৎসীমার নিচে নেমে আসছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির ধীরগতিতে উন্নতি হতে পারে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) এমন তথ্য জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানিয়েছেন, ময়মনসিংহ বিভাগের জিঞ্জিরাম ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ-নদীসমূহের পানির সমতল বাড়ছে। অপরদিকে ভুগাই ও সোমেশ্বরী নদীর পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে এবং কংস নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল রয়েছে। বর্তমানে নেত্রকোনা জেলার সোমেশ্বরী নদী কলমাকান্দা এবং জামালপুর জেলার জিঞ্জিরাম নদী, গোয়ালকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, আগামী তিনদিন ময়মনসিংহ বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতিভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কম রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী তিনদিন পর্যন্ত ভুগাই নদীর পানির সমতল হ্রাস পেতে পারে এবং শেরপুর, ময়মনসিংহ জেলার ভুগাই নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। আগামী তিনদিন নেত্রকোনা জেলার কংস ও সোমেশ্বরী নদীর পানির সমতল হ্রাস পেতে পারে এবং সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
অপরদিকে আগামী একদিন জামালপুর জেলার জিঞ্জিরাম নদীর পানির সমতল ধীর গতিতে বাড়তে পারে। পরবর্তী একদিন স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী একদিন হ্রাস পেতে পারে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী দুদিন পর্যন্ত জামালপুর জেলার জিঞ্জিরাম নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী একদিন ধীর গতিতে উন্নতি লাভ করতে পারে।
রংপুর বিভাগের ব্রহ্মপুত্র নদ ও তার ভাটিতে যমুনা নদীর পানি সমতল বাড়ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী পাঁচদিন পর্যন্ত নদ-নদীসমূহের পানি সমতল বাড়তে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
রাজশাহী বিভাগের গঙ্গা এবং তার ভাটিতে পদ্মা নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী পাঁচদিন গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানির সমতল হ্রাস পেতে পারে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। সিলেট বিভাগের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, আগামী তিনদিন পর্যন্ত সিলেট বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতিভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কম রয়েছে। তবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা রয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী দুদিন সুরমা ও কুশিয়ারা নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে এবং পরবর্তী একদিন স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
সিলেট বিভাগের অন্যান্য প্রধান নদীসমূহ সারিগোয়াইন, যাদুকাটা, ধলাই ও খোয়াই নদীসমূহের পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে। অপরদিকে মনু নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল রয়েছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী একদিন মনু-খোয়াই নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল এবং পরবর্তী একদিন হ্রাস পেতে পারে। পরবর্তী একদিন স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
অপরদিকে আগামী দুদিন পর্যন্ত অন্যান্য নদীসমূহ-সারিগোয়াইন, যাদুকাটা, ধলাই নদীসমূহের পানির সমতল হ্রাস পেতে পারে এবং পরবর্তী একদিন স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
চট্টগ্রাম বিভাগের সাঙ্গু এবং মাতামুহুরী নদীসমূহের পানির সমতল বাড়ছে। অপরদিকে গোমতী, মুহুরী, ফেনী নদীসমূহের পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে এবং হালদা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল রয়েছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, আগামী তিনদিন পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতিভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কম রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী তিনদিন চট্টগ্রাম বিভাগের এ সব নদীসমূহের পানির সমতল হ্রাস পেতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও তৎসংলগ্ন উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় বর্তমানে সক্রিয় লঘুচাপ বিরাজমান নেই। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী দুদিন পর্যন্ত অমাবস্যার কারণে বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় নদীসমূহে স্বাভাবিক চেয়ে কিছুটা বেশি জোয়ার পরিলক্ষিত হতে পারে এবং উপকূলীয় অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের কম প্রবণতা রয়েছে।
রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী তিনদিন পর্যন্ত তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
ঢাকা জেলা এবং এর নিকটবর্তী প্রধান নদীসমূহ-বুড়িগঙ্গা, টঙ্গী খাল, তুরাগ ও বালু নদীসমূহের পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে। আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, আগামী তিনদিন পর্যন্ত ঢাকা বিভাগে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কম রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী তিনদিন পর্যন্ত এসব নদীসমূহের পানির সমতল হ্রাস পেতে পারে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
