১৩ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

add

যে আমলকে ধনীদের হজ-ওমরা-সদকার চেয়ে উত্তম বলেছেন নবীজি

todaysylhet.com
প্রকাশিত ০৮ অক্টোবর, মঙ্গলবার, ২০২৪ ১৮:০৩:৫৬
যে আমলকে ধনীদের হজ-ওমরা-সদকার চেয়ে উত্তম বলেছেন নবীজি

ধর্ম ডেস্ক :: রাসুলুল্লাহ (স.) হাদিস শরিফে এমন এক আমলের কথা বলেছেন, যেটি ধনীদের হজ, ওমরা ও সদকার চেয়ে উত্তম। অবশ্য ধনীরাও ওই আমল করলে প্রতিদান থেকে বঞ্চিত হবেন না। আমলটি আল্লাহর রাসুল (স.) মূলত দরিদ্র সাহাবিদের শিখিয়েছিলেন।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, দরিদ্র লোকেরা নবী কারিম (স.)-এর কাছে এসে বলল, সম্পদশালী ও ধনী ব্যক্তিরা তাদের সম্পদের দ্বারা উচ্চ মর্যাদা ও চিরস্থায়ী নেয়ামত নিয়ে আমাদের থেকে এগিয়ে গেলেন। তারা আমাদের মতো সালাত আদায় করছেন, আমাদের মতো সিয়াম পালন করছেন এবং তারা তাদের অর্থ-সম্পদের মাধ্যমে হজ, ওমরা, জিহাদ ও সদকা করার মর্যাদাও লাভ করছেন। এ কথা শুনে রাসুল (স.) বলেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন কিছু কাজের কথা বলব, যা তোমরা করলে, যারা নেক কাজে তোমাদের চেয়ে অগ্রগামী হয়ে গেছে, তাদের পর্যায়ে পৌঁছতে পারবে। কেউ তোমাদের সমপর্যায়ে উপনীত হতে পারবে না। আর লোকদের মধ্যে তোমরাই হবে উত্তম আমলকারী, তবে যে ব্যক্তি এ ধরনের আমল করবে তার কথা ভিন্ন। তোমরা প্রত্যেক সালাতের পর ৩৩ বার করে তাসবিহ (সুবহানাল্লাহ), তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ) এবং তাকবির (আল্লাহু আকবার) পাঠ করবে।’ (বুখারি: ৮৪৩)

 

 

উল্লেখিত হাদিস থেকে জানা গেল- সেই আমলটি কী। সেই মর্যাদাপূর্ণ আমলটি হলো- প্রত্যেক নামাজের পর ৩৩ বার করে সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ ও আল্লাহু আকবর বলা। বিভিন্নভাবে আমলটি করা যায়। নিম্নবর্ণিত পদ্ধতিগুলো থেকে যেকোনো পদ্ধতিতে যার যার সুবিধামতো আমলটি করা যাবে। পদ্ধতিগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।

১. সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার, আল্লাহু আকবার ৩৩ বার ও ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির’ একবার, মোট ১০০ বার। হাদিসে এসেছে, এভাবে পড়লে গুনাহ সাগরের ফেনারাশির মতো অসংখ্য হলেও ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (মুসলিম: ৪৯০৬)

২. সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার, আল্লাহু আকবার ৩৩ বার করে মোট ৯৯ বারও পাঠ করা যায়। উপরে বর্ণিত হাদিসটি তার দলিল। (বুখারি: ৮৪৩)

 

আরও পড়ুন: চার জিকির ১০০ বার করে পড়ার বিস্ময়কর ফজিলত

৩. সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার, আলহামদু লিল্লাহ ৩৩ বার, আল্লাহু আকবার ৩৪ বার বলে ১০০ পূর্ণ করবে। (মুসলিম: ৫৯৬; সহিহ আত-তারগিব: ১৫৯৩)

৪. সুবহানাল্লাহ ২৫ বার, আলহামদু লিল্লাহ ২৫ বার, আল্লাহু আকবার ২৫ বার এবং লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ ২৫ বার, মোট ১০০ বার পাঠ করবে। (নাসায়ি: ১৩৫০)

৫. সুবহানাল্লাহ ১০ বার, আলহামদু লিল্লাহ ১০ বার, আল্লাহু আকবার ১০ বার, মোট ৩০ বার পাঠ করবে। হাদিসে এসেছে, প্রতি ওয়াক্ত সালাতের পর ১০ বার সুবহানাল্লাহ, ১০ বার আল্লাহু আকবার এবং ১০ বার আলহামদুলিল্লাহ পড়লে হয় (পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে) ১৫০ এবং আমলনামায় হয় এক হাজার ৫০০। (তিরমিজি: ৩৪১০)

উপরোক্ত পাঁচ পদ্ধতির যেকোনো একটির ওপর আমল করা যাবে। এগুলোকে আমরা তিন তাসবিহ বলে থাকি। সালাতের পর ঘুমের আগে তিন তাসবিহ পাঠ করার কথাও হাদিসে এসেছে। আলী ইবনে আবি তালিব (রা.) থেকে বর্ণিত, ফাতেমা (রা.) যখন মহানবী (স.)-এর কাছে একজন সেবক চেয়েছিলেন, তখন রাসুল (স.) বলেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন কিছু সম্পর্কে জানাব না যা তোমাদের জন্য একজন সেবকের চেয়ে উত্তম হবে? তোমরা যখন বিছানায় যাও তখন ৩৪ বার আল্লাহু আকবার, ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদু লিল্লাহ পাঠ করো। এটা তোমাদের জন্য একজন সেবকের চেয়ে উত্তম হবে।’ (বুখারি: ৬৩১৮)