সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: দিন কিংবা রাত প্রতি মুহূর্তেই চলছে মশার অত্যাচার। ঘরে দিনে-রাতে কয়েল জ্বালিয়েও রেহাই মিলছে না মানুষের। মশার এমন উৎপাতে সুনামগঞ্জে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছে। শীতের আগমনী বার্তার সাথে সাথে কমে গেছে বৃষ্টিপাত। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় জমে থাকা পানিতে বেড়েই চলছে মশার বংশবিস্তার।
তথ্য বলছে, বৃষ্টির ফোঁটা নিয়ন্ত্রণে রাখে মশা। অন্যদিকে দিন দিন বাড়ছে মশার প্রজনন ক্ষেত্র। দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার করা হয় না পৌরশহরের ভেতরে থাকা বিভিন্ন ড্রেন, খাল, নালা। বিভিন্ন জায়গায় স্তুপে স্তুপে জমে আছে আবর্জনা। এতে দ্রæত মশার বংশবিস্তার হচ্ছে। আর এই মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছেন শহরবাসী। মশার প্রকোপে দিন-রাত ২৪ ঘন্টা জ্বালিয়ে রাখতে হচ্ছে মশার কয়েল। তবুও মিলছেনা শান্তি। সারাক্ষণ কয়েল জ্বালানোর কারণে বাড়ছে সংসারের খরচ। কয়েলের ক্ষতিকর ধোঁয়ায় বাড়ছে শ্বাসকষ্টসহ নানা রকমের শ^াসজতিত রোগ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মশার কয়েলের ধোঁয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা। মশার অত্যাচার থেকে রেহাই দিতে দ্রæত কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি পৌরবাসীর।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ডেঙ্গুর প্রকোপ না থাকলেও পর্যটন এলাকা হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের সমাগম হয় সুনামগঞ্জে। দ্রæত যদি মশা নিধন না করা যায় তাহলে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। পাশাপাশি ডেঙ্গু মৌসুম হওয়ায় অনেকটা উদ্বেগের কথাও জানান বাসিন্দারা।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা গৃহিণী সুমি বেগম বলেন, মশা অতিরিক্ত হারে বেড়ে গেছে। মশার যন্ত্রণায় ঘুমানো যায় না। রাতে মশারি ছাড়া ঘুমানো অসম্ভব। দিনের বেলায়ও যন্ত্রণা দেয়। বেশি সমস্যা শিশুদের নিয়ে। তাদের চোখÑনাক জ্বালাপোড়া করে কয়েল জ্বালালে। তাই ছোট ছোট শিশুদের ২৪ ঘন্টা মশার হাত থেকে রক্ষা করার যুদ্ধ করতে হয়। এরপরও চোখের আড়ালে একটা কামড় দিয়ে দিলে সারাদিন যন্ত্রণায় কাঁদতে থাকে।
৩ নম্বর ওয়ার্ডের একটি মাদরাসার শিক্ষক হাসান মাহমুদ বলেন, মশার কামড়ের যন্ত্রণায় মাদরাসার শিশুরা ঠিকমতো লেখাপড়া করতে সমস্যা হচ্ছে। ছোট একটা মশা কিন্তু অনেক বড় যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৭ নম্বর ওয়ার্ডের সালমান আহমেদ বলেন, কি দিন কি রাত ঘরে থাকলেই কয়েল জ্বালাতে হয়। নাহলে এক মিনিটও বসা যায় না। প্রত্যেকদিন প্রত্যেক রুমে ২৪ ঘন্টায় ৩ টা কয়েল লাগে। মাস শেষে ৬-৭শ’ টাকা অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে শুধু কয়েলের পেছনে।
মশা বৃদ্ধির কথা জানিয়ে সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. জসিম উদ্দিন বলেন, যে ঘরে শিশু, বৃদ্ধ কিংবা বয়ষ্ক ব্যক্তি থাকেন, সে ঘরে কয়েল জ্বালানো একেবারেই নিষিদ্ধ। কয়েলের ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। আর কয়েলের দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
মশা নিধনে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে দায়িত্ব পালন করে স্থানীয় সরকার। মশা একেবারে নিধন করা সম্ভব নয়, তবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে। এক্ষেত্রে মশার প্রজনন ক্ষেত্রগুলোতে ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়। তবে শুধু এক দুইবার করলেই হবে না এটা নিয়মিত রাখতে হবে।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী কালী কৃষ্ণ পালের কাছে মশা নিধনে পৌরসভার পদক্ষেপ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ওষুধ কেনার চেষ্টা করছি। আশাকরি দুই একদিনের মধ্যে ওষুধ দেয়ার কার্যক্রম শুরু করতে পারবো।
Editor-in-Chief and Publisher: Mohammed Imran Ali, Executive Editor: Ahmed Ferdous Shakar, News Editor: Ahia Ahmed. E-mail: news.todaysylhet24@gimal.com
www.todaysylhet.com