
নিজস্ব প্রতিবেদক :: তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় সিলেটের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। শীতের প্রকোপে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাচ্ছেন দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ। গত দুদিন ধরে সূর্যের দেখা না মেলায় তীব্র ঠাণ্ডায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলায়ও সড়কে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই ঘন কুয়াশায় ঢেকে আছে সিলেটসহ দেশের বেশ কয়েকটি বিভাগ।
শীতের দাপটে প্রতিদিন কাজের সন্ধানে বের হচ্ছেন নিম্নআয়ের মানুষেরা এখন অসহায় পরিস্থিতিতে দিন কাটাচ্ছেন। কৃষি শ্রমিক থেকে শুরু করে রিকশাচালক ও দিনমজুরেরা অনেকেই বলছেন, তীব্র ঠাণ্ডার কারণে বাইরে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। যে সামান্য আয় দিয়ে তাদের পরিবার চলে, তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ বেড়ে যাচ্ছে।
এছাড়া, গরম কাপড়ের অভাবে শীতার্ত মানুষ রাতের সময় চরম কষ্টের মধ্যে রয়েছে। বিশেষত, পথশিশু, বৃদ্ধ ও দুঃস্থ জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ তৎপরতার দাবি তুলছেন স্থানীয়রা। ইতোমধ্যে কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং ব্যক্তি উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়েছে। তবে সেই উদ্যোগ অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ দিকে আবহাওয়া অফিস বলছে, সিলেটে মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশা থাকবে। আগামী তিনদিন তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
শ্রমজীবি মখরম আলী বলেন, আমরা বাচঁতাম কিলা, আমরাওে দেখার কেউ নাই, আমরা সকাল ওইলে কাম ওর লাগি বাড়ই, ঠান্ডার কারণে কাম করতে কষ্ট হয়। আমরা দিনও কাম করলে রাইত ভাত খাইতাম, এখন আর মানুষ আমরাওে কামও নিত চায় না।
রিকশা চালক কুদ্দুস মিয়া বলেন, মামা আমরার ঠান্ডা বলতে কিচ্ছু নাই। আমরা যদি রিকশা না চালাই দিন শেষে আমরার ঘর ও ভাত নাই, বাচ্ছা ২ টা তারার মুখে দি চাইয়া বাড়িত বইতে পাড়ি না। দিন শেষে আমরা একলা।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস মতে, গত বুধবার মধ্যরাত থেকে এখন পর্যন্ত সিলেটে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা রয়েছে এবং কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত এ অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানায় আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়া অফিসের শাহ মো. সজিব হোসাইন জানান, গতকাল সিলেটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ২৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার সিলেটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে আগামী দু’তিনদিন আবহাওয়া অপরিবর্তিত থাকতে পারে।