জকিগঞ্জ প্রতিনিধি :: সিলেট জেলার পূর্ব সীমান্তবর্তী কৃষিনির্ভর জকিগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর খালের মুখের বাঁধ দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে অপসারণ করতে না পারায় অত্র উপজেলার হাজার হাজার হেক্টর কৃষিজমি অনাবাদী থেকে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। কৃষিনির্ভর উপজেলার কৃষকরা বছরের পর বছর ক্ষেতের জমিতে পানি না পেয়ে কোন কৃষিক্ষেত করতে পারছে না।
জানা যায়, জকিগঞ্জ উপজেলার শরিফগঞ্জ বাজারের সন্নিকটে কুশিয়ারা নদী থেকে দীর্ঘ ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য রহিমপুর খালটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ২০১০ সালে সুরমা কুশিয়ারা প্রকল্পের মাধ্যমে শতকোটি টাকা ব্যয়ে পুনঃখনন ও পাম্পহাউস নির্মাণ করা হয়। খালখনন ও পাম্প হাউস নির্মাণে খালের পানি আটকানোর জন্য ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি বাঁধ নির্মাণ করা হয়। পাম্প হাউস নির্মাণ ও খাল পুনঃখননের পর বাঁধটি অপসারণ করতে চাইলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ বাধা প্রদান করে। বাঁধ অপসারণ করতে না পারায় পানির অভাবে এলাকার কৃষিজমি অনাবাদী থেকে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। বাঁধটি এলাকার কৃষকদের এখন গলার কাটায় পরিণত হয়েছে।
কুশিয়ারা নদীর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতীয় সীমান্তরেখা গিয়েছে। কুশিয়ারা নদী দু’দেশের মধ্যে ভাগ হয়ে যাওয়ায় নো-ম্যান্স ল্যান্ডের অংশ হওয়ায় ভারতের বাঁধার মুখে বাঁধ অপসারণ করা যায়নি। ২০২২ সালের ২১ আগস্ট যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক শেষে কুশিয়ারা নদী থেকে রহিমপুর খাল দিয়ে ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহারের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয় এবং বাংলাদেশ ভারতের সাথে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে। এ সমঝোতা স্মারকের ফলে রহিমপুর সংযোগ খালের মাধ্যমে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা পাওয়া যাবে বলে আশা করা হয়। তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড বলেছিল ২০২২ সালের নভেম্বরে বোরো ফসল রোপণের পূর্বেই চুক্তি মোতাবেক পানি প্রত্যাহার করা সম্ভব হবে। কিন্তু চুক্তির আড়াই বছর পরও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ এর বাধার কারণে রহিমপুর খালের মুখের বাঁধ অপসারণ করে রহিমপুর পাম্পহাউস চালু করা যায়নি।
এলাকাবাসীর অভিমত চুক্তি অনুযায়ি পানি পাওয়া গেলে উপজেলার কৃষকরা ৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ও রবিশষ্য ক্ষেত করতে পারতো এবং পার্শ্ববর্তী কানাইঘাট বিয়ানীবাজার গোলাপগঞ্জ ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার অনেক কৃষক লাভবান হতো। কিন্তু পানির অভাবে কৃষকরা ক্ষেত করতে না পারায় চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের জকিগঞ্জ শাখা কর্মকর্তা উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া জানান, ভারত-বাংলাদেশ সমঝোতা স্মারক সই হলেও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফের বাধার মুখে বাঁধ অপসারণ করা সম্ভব হচ্ছেনা। তবে পাম্প হাউস ও খালের উন্নয়ন চলমান রয়েছে। দ্রুততম সময়ে সব আনুসাঙ্গিক কাজ শেষ করে বাঁধ অপসারণ করে পাম্প হাউস চালু হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
Editor-in-Chief and Publisher: Mohammed Imran Ali, Executive Editor: Ahmed Ferdous Shakar, News Editor: Ahia Ahmed. E-mail: news.todaysylhet24@gimal.com
www.todaysylhet.com