২২শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

add

গোলাপগঞ্জে পরোয়ানাভূক্ত আসামী হান্নান গ্রেফতার

todaysylhet.com
প্রকাশিত ২১ জুন, শনিবার, ২০২৫ ১৫:১৯:১৩
গোলাপগঞ্জে পরোয়ানাভূক্ত আসামী হান্নান গ্রেফতার

{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":["local"],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":false,"containsFTESticker":false}

টুডে সিলেট ডেস্ক :: গোলাপগঞ্জের প্রতারণা মামলার এজাহারনামীয় ৬ নাম্বার আসামী আব্দুল হান্নানকে গ্রেফতার করেছে গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ।

শুক্রবার (২০ জুন) সিলেট নগরীর এয়ারপোর্ট থানাধীন খাসদবীর এলাকার মল্লিকা-৬৪ আবাসিকের নিজ বাসভবন থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গোলাপগঞ্জ থানার গোলাপগঞ্জ পৌরসভার ৮ নং রনিকেলী লামার দক্ষিণভাগ এলাকার মৃত আজিবুর রহমান চৌধুরীর ছেলে হাফিজ আল মাহমুদ চৌধুরী (৫০) বাদী হয়ে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার ধারা ১৪৩/৩২৩/৩২৫/৩০৭/৩৭৯/৪০৬/৪২০/৫০৬ এর ৩৪ পেনালকোড মোতাবেক মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলা নং- ০৭।

এই মামলায় আসামীরা হলেন- ১। সানাউর রব চৌধুরী তাবিন (৩৫), ২। জান্নাত ফারহানা রব চৌধুরী (৪২), ৩। ফজলে রব চৌধুরী (৩৮), ৪। জান্নাত ইমরানা রব চৌধুরী (৪৫), ৫। জান্নাত ফাতেমা রব চৌধুরী (৪৮), সর্ব পিতা- আব্দুর রব চৌধুরী মাতা- মৃত আম্বিয়া খানম চৌধুরী, সর্ব সাং- রণকেলী লামার দক্ষিণভাগ, থানা-গোলাপগঞ্জ, জেলা-সিলেট ৬। আব্দুল হান্নান (৪৫), পিতা- অজ্ঞাত, স্ত্রী- জান্নাত ফারহানা চৌধুরী, হাল সাং- মল্লিকা-৬৪, খাসদবীর, থানা-এয়ারপোর্ট, সিলেট মহানগর, ৭। মোঃ শরীফ উদ্দিন (৫৫), পিতা-মৃত নুর উদ্দিন, সাং- বাঘা পরগনা, ০১ নং বাঘা ইউপি, বর্তমানে সাং- ধারাবহর, ৮। লিটন আহমদ (৩৪) পিতা- মৃত ইউসুফ, সাং- দক্ষিণ কান্দিগাও, ৯। আব্দুল লক (৫০), পিতা-মৃত ওয়ারিছ আলী, সাং- ধারাবহর, ০১ নং বাঘা ইউপি, সর্ব থানা-গোলাপগঞ্জ, জেলা-সিলেট ১০। জসিম উদ্দিন (৩০), পিতা- সুমন আহমদ কাশেম, সাং- আনন্দ-২, খরাদি গোলাপগঞ্জ পাড়া রায়নগর, থানা- শাহপরাণ, জেলা- সিলেট মহানগর।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ৩ জুন আনুমানিক বেলা সাড়ে ১২টার দিকে গোলাপগঞ্জ পৌরসভার ৮ নং রনিকেলী লামার দক্ষিণভাগ এলাকায় ১-৫ নং আসামীদের বসত বাড়ি। এজাহারে বর্ণিত আসামীগণ ইতোপূর্বে তপশীল বর্ণিত ভূমি বিক্রি করার নামে একাধিক লোকজনের সহিত বায়না চুক্তিপত্রের মাধ্যমে আত্মসাৎম্মুলক প্রতারণা করে আসছে। সমূহ আসামীগণ সংঘবদ্ধ একটি প্রতারক চক্র, ধারাবাহিক ভাবে প্রতারণা করে আসতেছে। সাক্ষী এস, এ মালেক এর সহিত তপশীল বর্ণিত ভূমি ১-৫নং আসামীদের সম্মতিক্রমে তাদের উপস্থিতিতে এবং ১-৫নং আসামীদের মাতা আম্বিয়া খানম কোরেশী বিগত ১৩/০২/২০০৮ খ্রিঃ তারিখে ৫০ লক্ষ টাকা মূল্য সাব্যস্থ করে নগদে ১২লক্ষ টাকা এবং ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকা সর্ব মোট ২২,০০,০০০/- (বাইশ লক্ষ) টাকা গ্রহণপূর্বক আম্বিয়া খানম কোরেশী ১৫০/-টাকার ননজুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে আনরেজিষ্টার্ড বায়নাপত্র সম্পাদন করেন। ২০১৭ সালে আম্বিয়া খানম কোরেশী মারা যান। তখন জমি রেজিস্ট্রী করে দেয়ার জন্য উত্তরাধিকারী হিসেবে আসামিদেরকে চাপ দিলে তপশীল বর্ণিত ভূমির কাগজপত্র ও রাস্তার জটিলতা থাকায় আসামিরা রেজিষ্ট্রি করে দিতে পারে নাই। এদিকে বায়না গ্রহিতা সাক্ষী এস.এ মালেক কানাডায় যাওয়ার জন্য সকল ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করায় ১-৫নং আসামীগণ তপশীল বর্ণিত ভূমি রেজিষ্ট্রি করে দিতে না পারায় বায়নাপত্রে উল্লেখিত ২২,০০,০০০/-(বাইশ লক্ষ) টাকা বায়না গ্রহিতা সাক্ষী এস.এ মালেক ফেরত চাইলে আমি এবং উল্লেখিত স্বাক্ষীগণ সহ সমূহ আসামীগণ এক সালিশ বৈঠকে বসে আলাপ আলোচনা ক্রমে এক পর্যায়ে ১-৫নং আসামীগণ আমাকে প্রস্তাব করেন যে তপশীল বর্ণিত ভূমি আপনার অংশের পার্শ্ববর্তী রয়েছে আপনি বায়না গ্রহিতা সাক্ষী এস.এ মালেকের ২২ লক্ষ টাকা প্রদান করে দিলে তপশীল বর্ণিত ভূমির কাগজপত্র ও রাস্তা সংক্রান্ত জটিলতা সমাধান করে আমরা আপনার নামে রেজিষ্ট্রি সাফ কবালা দলিল সম্পাদন করে দিবো। আমি সরল বিশ্বাসে আসামীদের প্রস্তাবে রাজি হলে আমার নিকট হতে ২২ লক্ষ টাকা আসামিরা গ্রহণ করে মালেককে প্রদান করে। উক্ত টাকা নিয়ে সাক্ষী এসএ মালেক কানাডা চলে যায়।
আমি ১-৫ নং আসামীদেরকে জমি রেজিস্ট্রির জন্য চাপ দিলে ৬.৭,৮,৯ ও ১০নং আসামীগ, প্ররোচনায় ১-৫নং আসামীগণ আমার নামে দলিল সম্পাদন করে না দিয়ে প্রতারনামূলক আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কৌশলে সময় কালক্ষেপন করতে থাকে। এই ভাবে দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও ১-৫নং আসামীগণ তপশীল বর্ণিত ভূমির তাদের পাওনা অবশিষ্ট টাকা নিয়ে আমার নামে সাফ কবালা দলিল সম্পাদন করে দেয়নি। আসামীগণের এহেন কার্যকলাপে এবং প্রতারনামূলক আচরণে আমার মনে সন্দেহ জাগলে আমাকে দলিল রেজিষ্ট্রি করে দেওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে ১-৫নং আসামীগণ আমাকে বলে যে তপশীল বর্ণিত ভূমি তারা বেশি দামে অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছে। আমার পাওনা ২২ লক্ষ টাকা আমাকে ফেরত প্রদান করে দিবে। আমাকে আমার টাকা ফেরত প্রদানের জন্য অনেক বার তারিখ প্রদান করেও টাকা ফেরত প্রদান করেনি। ঘটনার তারিখ ও সময়ে অর্থাৎ ০৩/০৬/২০২৫ খ্রিঃ সময় ১২:৩০ ঘটিকার সময় আমি এজাহারে বর্ণিত ১-৮ নং সাক্ষীসহ গোলাপগঞ্জ থানাধীন রণকেলী লামার দক্ষিণভাগ সাকিনস্থ ১-৫ নং আসামীদের বসত বাড়ীতে পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ার জন্য গেলে আসামীগণ প্রতারনা ও বিশ্বাসভঙ্গ করতঃ আত্মসাৎ করবার উদ্দেশ্যে পূর্বের সমুহ ঘটনা অস্বীকার করে। আমার সাথে এই মিথ্যা নাটক করার কারণ জানতে চাইলে সমুহ আসামীগণ একই সুরে বলে যে এই ঘটনায় কোন মামলা মোকদ্দমা কিংবা বিচার পঞ্চায়েত করলে প্রাণে হত্যা করতঃ লাশ গুম করে ফেলবে বলে হুমকি প্রদান করে। আমি উত্তেজিত হলে সাক্ষীদের সম্মুখে আসামী আব্দুল হান্নান আমাকে তার হাতে থাকা কাঠের রোইল দ্বারা প্রাণ নাশের উদ্দেশ্যে মাথায় বারি মারলে আমার মাথায় গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হই। আসামী শরিফ, হান্নান, আব্দুল লক, লিটন, জসিম গণ তাদের হাতে থাকা লাটি দ্বারা আমার সারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে নীলাফুলা জখম করে। অপরাপর সকল আসামিরা তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দ্বারা আমাকে মারপিট করে গুরুতর আহত করে। আসামি লিটন আমার পকেটে আই ফোন ১২ মোবাইল ফোনটি কেড়ে নিয়ে যায় (যার মূল্য অনুমান ৫০,০০০/-টাকা) এবং আসামি জসিম আমার পকেটে থাকা নগদ ১১,০০০/-টাকা কেড়ে নিয়ে যায়। আমি মাটিতে পড়ে গেলে আসামি জান্নাত ফারহানা রব চৌধুরী আমাকে মৃত্যু ঘটানোর উদ্দেশ্যে আমার অন্ডকোষে ধরে চাপ দিলে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। সাক্ষীরা আমাকে আমামীদের কবল হতে উদ্ধার করে গোলাপগঞ্জ স্বাস্থ্য কপ্লেক্সে নিয়ে যান। আমি সেখানে চিকিৎসা করাই। আসামীগণ আমার নিকটাত্মীয় হওয়ায় এবং আমি আসামীগণের নিকটাত্মীয়দের সহিত সমুহ ঘটনার বিষয়ে বিচারপ্রার্থী হলে তারা আমাকে বলেন যে তোমার সাথে প্রতারনা করার পূর্বেও তপশীল বর্ণিত ভূমি নিয়ে অতেক লোকজনের সহিত আসামীগণ প্রতারনা করেছে। সুতরাং তোমাকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ প্রদান করতেছি। স্থানীয় ভাবে বিচার পঞ্চায়েতের অপেক্ষায় থাকায় অত্র এজাহার দায়ের করতে বিলম্ব হয়।

এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মোল্ল্যা জানান, এজহারনামীয় একজন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়ছে।