টুডে সিলেট ডেস্ক :: সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে দুর্বৃত্তদের বাঁধার কারনে যাদুকাটা বালুমহালে রয়্যালেটি আদায় বন্ধ থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার যাদুকাটা বালুমহাল-১ এর ইজারাদার মোঃ রতন মিয়া স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এমন অভিযোগ করেন। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরপরই গত ৬ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে রয়্যালেটি আদায়। পাঁচদিনে প্রায় ছয় কোটি টাকার উপরে ক্ষতি হয়েছে তার। এমন পরিস্থিতিতে তিনি দুর্বৃত্তদের হামলা ও তৎপরতা বন্ধে প্রশাসন ও গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতা চেয়েছেন।
অভিযোগ পেয়ে সরেজমিনে যাদুকাটা নদীর মিয়ারচর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, যাদুকাটায় কোনোপ্রকার বালুবাহী নৌকা চলাচল নাই। অর্ধশতাধিক বালু পরিবহণকারী খালি নৌকা যাদুকাটার প্রবেশপথ আনোয়ারপুর ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এসময় বালু পরিবহণকারী। নৌকা ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজ এর মাঝি সবুজ মিয়া জানান, আমরা অনেক দূর থেকে আসছি। বালু আনতে যাদুকাটায় যেতে চাইলে স্থানীয় ৪০-৫০জন লোক আমাদের প্রায় ৫০-৬০টি নৌকা এখানে আটকে দেয়। তারা বলে বালু আনতে যাওয়া যাবেনা। আমাদের এখানে জামেলা চলছে। তারা আরও জানান,আমরা অসহায় মানুষ যত দিন আটকে থাকবো ততদিন ক্ষতি হবে।
যাদুকাটা বালুমহালে-১ এর ইজারাদার মো. রতন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, সরকার পরিবর্তনের পরপরই স্থানীয় একটি স্বার্থান্বেষীমহল নদীর ফাজিলপুর এলাকায় রয়্যালটি আদায়ের অফিসঘরে হামলা করে এবং গিয়ে হুমকি দিয়ে আসে যেন রয়্যালিটি আদায় থেকে আমরা বিরত থাকি। পরে নিরাপত্তার অভাবে অফিসটি স্থানান্তর করে মিয়ারচর এলাকায় নিয়ে আসি। কিন্তু এখন পর্যন্ত রয়্যালটি আদায় কার্যক্রম চালাতে পারছিনা। শুরুতে চক্রটি নদীতে দলবল নিয়ে এসে জানিয়ে যায়, যাদুকাটা নদীতে বালুবাহী নৌকার রয়্যালিটি ফ্রি। ইজারাদারকে কোনোপ্রকার রয়্যালটি দিবেন না। পরবর্তীতে চক্রটি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বালু পরিবহণকারী নৌকা আনোয়ারপুর এলাকায় আটক করে রাখে। নদীতে বালুবাহী কোনোপ্রকার নৌকা চলতে দিচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে এলাকার কিছু অসাধু মানুষ আমার এই বৈধ ব্যবসায় জোরপূর্বক ভাগ বসাতে হুমকি দিচ্ছে। তাদের এই অন্যায় আবদারে রাজি না হওয়ায় চক্রটি এখন বালুপরিবহনকারী কোনো নৌকা নদীতে ঢুকতে দিচ্ছে না। তাদের এসব অপকর্মের কারণে নদীতে হাজার হাজার শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা বেকার হয়ে পড়েছে।
এ নিয়ে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, থানা পুলিশের কার্যক্রম বন্ধ থাকার সুযোগে দুর্বৃত্তরা এ সুযোগটি নিয়েছে। আমি ইউএনওকে বলে দিয়েছি এ ব্যপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে।
প্রসঙ্গত, ১৪৩১ বাংলা সনে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন কর্তৃক যাদুকাটা বালুমহাল-১ এর সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ইজারাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন মেসার্স সোহাগ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. রতন মিয়া এবং যাদুকাটা-২ বালুমহালের সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ইজারাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন মেসার্স রিয়ান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. মুজিবুর রহমান।