টুডে সিলেট ডেস্ক :: সিলেটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দমনপীড়ন এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রুদ্র সেন হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (১৯ আগস্ট) সকালে সিলেটের অতিরিক্ত চীফ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন শাবিপ্রবির সমন্বয়ক আবিদুল ইসলাম (২৪)।
মামলায় সাবেক স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ছাড়াও ৩ সংসদ সদস্য, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েরিউপাচার্যসহ ৪ শিক্ষক কর্মকর্তা, পুলিশের উচ্চ পদস্থ চার কর্মকর্তাসহ ১১ জন, ৫ কাউন্সিলর, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের চার নেতা, সিলেট জেলা ও মহানগর ও শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের ৩২ নেতাকর্মী ও আওয়ামী লীগ এবং অংগসহযোগী সংগঠনের ১৬ জন কর্মীসমর্থককে আসামি করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ২/৩শ’ জনকে।
এজাহারনামীয় উল্লেখযোগ্য অন্যরা হলেন, সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট রনজিত সরকার, মৌলভীবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ফরিদ উদ্দিন, প্রো-ভিসি কবির হোসেন, সাবেক প্রক্টর মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী, কলেজ ইন্সপেক্টর তাজিম উদ্দিন।
মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছে সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখকে (৫০)। এছাড়াও অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (ক্রাইম উত্তর) মো. গোলাম সাদেক দস্তগীর কাউছার (৪০), জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান (৪৫), ওসি (তদন্ত) আবুল খালেদ মো. মামুন (৪৫),সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জগদীশ চন্দ্র দাস (৫৫), ৩২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুহেল আহমদ, ৩৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হেলাল উদ্দিন (৫৫),১০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারেক উদ্দিন তাজ। সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিধান কুমার সাহা (৫০), মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন খান (৫০), মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি (৪৫), জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম (২৭) ও সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ (৩০), মহানগরের সভাপতি কিশোওয়ার জাহান সৌরভ (২৮) ও সাধারণ সম্পাদক নাইম আহমদ (৩৮)। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সজল দাস অনিক, শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান (২৫), সাধারণ সম্পাদক সজিবুর রহমান (২৪), সহ-সভাপতি মামুন শাহ (২৮), যুগ্ম সম্পাদক সুমন মিয়া (২৪), সহ-সভাপতি ফারহান রুবেল (২৫), তায়েফ হোসেন (২৫), সাবেক শাবিপ্রবি ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসান স্বাধীন (২৪), সাইমন ইসলাম (২৫), শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন (২৭), সহ-সভাপতি তানিম খন্দকার (২২), দেলোয়ার হোসেন (২৫), শফিউল রাব্বি (২৩), রেজাউল হক সিজার (২৪), সহ-সভাপতি ইউসুফ হোসেন টিটু (২৩), মনসুর আলম নিরব (২৩), সাংগঠনিক সম্পাদক লোকমান হোসেন (২৫), আর কে রাকিব হোসেন (২৪), শুভ সাহা (২০), সহ-সভাপতি আশিকুর রহমান আশিক (২২), ফারহান হোসেন চৌধুরী আরিয়ান (২২), সানি শেখ (২২), মোহাম্মেদ তারেক (২২), শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শিমুল মিয়া (২২), আয়াজ চৌধুরী (২২), সাংগঠনিক সম্পাদক অমিত সাহা (২৪), আব্দুল কাদির মোহাম্মদ রেদোয়ান (৩০), নুরুল ইসলাম (৫০), ময়নুল ইসলাম (৩০), আহমদ সাজন, হাসান আহমদ, জাহিদ সরোয়ার সবুজ (৪৫), শহীদ মুহাম্মদ অকীল অপু (৩৪), মো. শাহজাহান (৪২), মুহাম্মদ আপ্তাব হোসেন সিরাজী (৪৬), অহিদ উদ্দিন দুলাল (৪০)।
মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি রশিদ আহমদ (৩৮), সিলেট জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল লতিফ রিপন (৪০),মুজিবুর রহমান মালদার (আমীরি) (৫০),আবু সুফিয়ান উজ্জল (৩৫),মাজহারুল ইসলাম সুমন (৪৫), শাহনুর আলম (৪০), রুহিন আহসান খান (৩৫), আমির হোসেন খান (বাবা সম্রাট) (৪৫)।
এসআই রেজওয়ান আহমদ (৩৫), কনস্টেবল রনি চন্দ্র রায় (৩০), এসআই নিহারেন্দু তালুকদার (৩৫), কনস্টেবল সুজিত সিংহ (৩৫), কনস্টেবল অপূর্ব সিংহ (৩২), কনস্টেবল প্রনজিৎ (৩৩), কনস্টেবল সুমন (২৬)।
মামলর বাদি শাবিপ্রবি সমন্বয়ক হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মহানগর পুলিশের দুই কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগের কয়েকজন এমপি, সিসিক মেয়র আনোয়ারুজ্জামানসহ ৭৬ জন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকায় এজহারনামীয় আসামি করা হয়েছে। আদালত আমাদের সার্বিক অভিযোগ পর্যালোচনা করে সত্যতা পাওয়ায় অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে নথিভুক্ত করেন। নিহত রুদ্র সেন আন্দোলনে সক্রিয় থাকায় তাকে পরিকল্পিতভাবে পানিতে ফেলে হত্যা করা হয়।’
জানা যায়, গত ১৮ জুলাই সন্ধ্যায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় রুদ্র সেন আহতাবস্থায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে সুরমা বাগবাড়ী এতিমখানা স্কুলের একটি খাল পার হতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা যান। তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাবিপ্রবির কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স (সিইপি) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।