রোমান আহমদ, অতিথি প্রতিবেদক :: সিলেটে তীব্র গরমের সঙ্গে হয়েছে লোডশেডিং। প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় লোডশেডিং এ ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরে ও শহরতলী এলাকার মানুষ। বৃষ্টির দেখা না পাওয়ায় গরমে হাঁসফাঁস করছেন সাধারণ মানুষ। সেই সঙ্গে লোডশেডিং যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে। লোডশেডিংয়ের তীব্রতায় জনজীবনে অস্থিরতা বিরাজ করছে। মানুষজন কোনো কাজকর্ম ঠিকমতো করতে পারছেন না। বিপদে পড়েছেন দিনমজুরসহ সব পেশার মানুষ। সিলেট বিভাগীয় বিদ্যুৎ অফিস জানিয়েছে, এখানে গতকাল শনিবার ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ লোডশেডিং হয়েছে। গতকাল দিনের বেলা বেরোলেই যেন শরীরে লাগছিল রোদের হলকাণ। এ অবস্থায় বেশি কষ্টে রয়েছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। এ বছর সূর্য তাপ ছড়াতে শুরু করলেই সিলেট নগরীতে তাপমাত্রা ৩৫-৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে যায়। ফলে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। গত তিন দিনের মতো গতকালও বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সিলেট নগর। কমে যায় মানুষের চলাচল। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছিলেন না। বাইরে বের হওয়া শ্রমজীবী মানুষেরা একটু পরপর পান করেছেন পানি, সতেজ রাখতে চেষ্টা করছেন নিজেকে। অনেকেই সড়কের পাশে বিক্রি করা ডাব, আইসক্রিম ও লেবুর শরবত কিনে খেয়েছেন।
নগরের জিন্দাবাজার এলাকার ভ্যান চালক হারিছ বলেন, ‘এমনিতেই রুজি-রোজগার নেই। তার ওপর পড়ছে গরম। গরমে গা পুড়ে যাচ্ছে। প্রচন্ড রোদ ও গরমের মধ্যে ভ্যান চালিয়ে ক্লান্ত এই চালক।পরিবারের দায়ে আজ বের হওয়া। তিন- চার দিন ধরে গরম বেড়ে গেছে, যে কারণে কাজ করতে পারছি না।’
সিলেট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গতকাল সিলেটে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সিলেট আবহাওয়া অফিসের উপসহকারী আবহাওয়াবিদ অমর চন্দ্র তালুকদার জানান, সিলেটের আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে মেঘলা রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অনেক জায়গায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। আর দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এদিকে এই গরমের মধ্যেও বেড়েছে লোডশেডিং। প্রতি ঘণ্টায় লোডশেডিংয়ে বিরক্ত হচ্ছেন বাসিন্দারা। গরমের কারণে করতে পারছেন না কোনো কাজ।
জিন্দাবাজারের ব্যবসায়ী কামরুল আহমদ বলেন, ‘আজ অফিসে এসেই দেখি বিদ্যুৎ নেই। এক ঘণ্টা পর দিল তো আবার নিয়ে নিল। এভাবে প্রতি ঘণ্টা পরপর বিদ্যুৎ নিচ্ছে আর দিচ্ছে। অন্যদিকে পড়েছে ভ্যাপসা গরম। ফ্যান চালিয়েও টিকে থাকা যাচ্ছে না। আর বিদ্যুতের এই ভেলকিভাজিতে উপায়ই নেই কাজ করার। এভাবে চলতে থাকলে অসুস্থ হয়ে পড়বে মানুষজন।’
সিলেটের বিভাগীয় বিদ্যুৎ অফিসের সহকারী প্রকৌশলী মো. জারজিসুর রহমান রনি বলেন, ‘বিদ্যুতের জ্বালানিস্বল্পতার কারণে এই লোডশেডিং হচ্ছে, যে কারণে আমরা পর্যাপ্ত চাহিদা পূরণ করতে পারছি না। সিলেটে আজ (শনিবার) ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ লোডশেডিং হয়েছে। এ রকম অবস্থা আগামী নভেম্বর পর্যন্ত চলার সম্ভাবনা রয়েছে।’