টুডে সিলেট ডেস্ক :: হঠাৎ বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে দেশের প্রবাসী আয়ে। কিছুদিন আগেও যেখানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৮ কোটি ডলার প্রবাসী আয় এসেছিল সেখানে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার সময় এক সপ্তাহে তার চাইতেও কম এসেছে। ফলে প্রবাসী আয় প্রবাহ কমে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রজনতার প্রাণহানির প্রতিবাদে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় না পাঠাতে ক্যাম্পেইন করছে প্রবাসীদের একটি অংশ। এমন পরিস্থিতিতে প্রবাসী আয় প্রবাহ বাড়াতে তোড়জোড় শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বৈধ চ্যানেলে প্রবাসী আয় প্রবাহ বাড়াতে ডলারের দাম ১১৯ টাকা ৪০ পয়সা পর্যন্ত বাড়িয়েছে ব্যাংকগুলো।
মূলত চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে প্রবাসী আয় প্রবাহে পতন দেখা দেয়। যা ঠেকাতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারই অংশ হিসেবে রোববার ব্যাংকগুলোকে উচ্চ হারে প্রবাসী আয়ের ডলার কিনতে মৌখিক নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। যার প্রেক্ষিতে সোমবার একদিনের ব্যবধানে প্রবাসী আয়ের ডলারের দর ৬০-৭০ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে গিয়েছে। একই দিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন এই নির্দেশনা কার্যকর করে দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে— গত বছরের ১ থেকে ২৪ জুলাই দেশে বৈধ পথে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৫৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার। আর চলতি বছরের একই সময়ে এসেছে ১৫০ কোটি ডলার। এর মধ্যে প্রথম ১৮ দিনে আসে ১৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার, আর ১৯ থেকে ২৪ জুলাই—ছয় দিনে এসেছে ৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন— দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে প্রবাসী আয় প্রবাহ আরও কমতে পারে। এতে অর্থ পাচার ও অবৈধ লেনদেন বাড়বে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য বড় অশনিসংকেত।
গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, প্রবাসী আয় পাঠানো হয় প্রধানত পরিবারের প্রয়োজনে। ফলে সংঘবদ্ধভাবে অনেক দিনের জন্য মানুষ প্রবাসী আয় পাঠাবে না, কিংবা হুন্ডি করবে তা বাস্তবসম্মত নয়। তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে জাতিসংঘ যদি তদন্ত করে কোনো ব্যবস্থা নেয়, তখন বিদেশি ঋণ ও অনুদান বাধাগ্রস্ত হতে পারে। আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকও সরে দাঁড়াতে পারে।