নিজস্ব প্রতিবেদক :: আওয়ামী সরকারের পাতানো কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার কঠোর সিদ্ধান্ত ছিল বিএনপির। দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছেও এ বার্তা দেয়া হয়। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে ২০২৩ সালে ২১ জুন অনুষ্ঠিত সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে অংশ নেন স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ৪৩জন নেতাকর্মী। তাদেরকে নির্বাচন থেকে সরানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা। কিন্তু তারা ভোটে লড়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকে।
এমতাবস্থায় নির্বাচনের ১৪ দিন আগে ৫ জুন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষর করা চিঠিতে এই ৪৩ জনকে বিএনপির সব পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। এদের মধ্যে ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে সাতজন নির্বাচিত হয়েছেন। কাউন্সিলর পদে শপথ নিয়ে দায়িত্ব পালন করেন। বিএনপি থেকে বহিস্কারের এক বছর তিন মাস পর কাউন্সিলর পদও হারালেন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির আদেশে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে সিলেট সিটি করপোরেশনের সব কাউন্সিলরদের অপসরাণ করা হয়। এদের মধ্যে বিএনপি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার হওয়া সাতজন কাউন্সিলরও রয়েছেন।
তারা হলেন সিলেট মহানগর বিএনপির বহিস্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ তৌফিকুল হাদী, মহানগর বিএনপির বহিস্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক ৬ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম, ১৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির বহিস্কৃত সদস্য ও কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মুমিন, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির বহিস্কৃত সদস্য কাউন্সিলর এ বি এম জিল্লুর রহমান, ২১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর আব্দুল রকিব তুহিন ও ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে সিলেট জেলা ছাত্রদলের বহিস্কৃত সভাপতি কাউন্সিলর আলতাফ হোসেন সুমন এবং ৪ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে সিলেট মহানগর মহিলা দলের বহিস্কৃত সহ-সভাপতি মোছা. রুহেনা খানম মুক্তা।
এদিকে, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি থেকে আজীবন বহিষ্কৃত অন্য নেতারা হলেন- মেয়রপদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন এবং ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সিলেট মহানগর মহিলা দলের সভাপতি অ্যাডভোকেট রোকসানা বেগম শাহনাজ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক উসমান হারুন পনির, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা গোলাম মোস্তফা কামাল, গউছ উদ্দিন পাখি, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন নাদিম, ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মুফতি কমর উদ্দিন কামু, ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান মিঠু, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মো. কামাল মিয়া ও সদস্য খালেদ আকবর চৌধুরী, আমিনুর রহমান খোকন, শাহেদ সিরাজ, ১০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান জুবের, ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য আব্দুর রহিম মতছির, ১৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মুজিবুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সালমান চৌধুরী শাম্মী, ২৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি মামুনুর রহমান মামুন, এমসি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বদরুল আজাদ রানা, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য হুমায়ুন কবির সুহিন, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি সেলিম আহমদ রনি, জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আব্বাস, বরইকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সহসাধারণ সম্পাদক জাবেদ আমিন সেলিম, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক রাজু মিয়া, বরইকান্দি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি সানর মিয়া, টুলটিকর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল মুকিত, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট হেদায়েত হোসেন তানবীর, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য দুলাল আহমদ, জেলা বিএনপি নেতা দেলওয়ার হোসেন জয়, মহানগর ছাত্রদলের সহসভাপতি আব্দুল হাছিব, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহ-ক্ষুদ্র ঋণবিষয়ক সম্পাদক সুমন আহমদ সিকদার, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপি নেতা সাহেদ খান স্বপন, বরইকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির নুরুল ইসলাম মাসুম, ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কৃষক দলের আহ্বায়ক ইউনুস মিয়া, সিলেট জেলা মহিলা দলের সভাপতি সালেহা কবির শেপী, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, সিলেট ইউনিটের সদস্য অ্যাডভোকেট জহুরা জেসমিন ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি কামরুন নাহার তান্নি।