নিজস্ব প্রতিবেদক :: গত বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রজ্ঞাপনে সিলেটসহ ৬১টি জেলা পরিষদের সদস্যদের অপসারণের সিদ্ধান্ত জানায় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। একই সাথে জেলা পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১৩ সদস্যের কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। তবে ওইদিন কমিটিতে কারা থাকবেন সেবিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী-
সিলেট জেলা পরিষদ পরিচালনায় ১৩ সদস্যের কমিটির সভাপতি হচ্ছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি)। বাকিরা হচ্ছেন- জেলা স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী, সমাজসেবা উপপরিচালক, জেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা, জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (সদস্য), সহকারী প্রকৌশলী, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সদস্য-সচিব)।
জেলা পরিষদের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কমিটি গঠন করেছে সরকার।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়- পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত জেলা পরিষদের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ‘জেলা পরিষদ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ১০২৪’- এর ধারা ৩ দ্বারা সন্নিবেশিত ৮২ক (২) ধারা মোতাবেক প্রশাসক, জেলা পরিষদের কর্ম সম্পাদনে সহায়তার লক্ষ্যে সরকার কমিটি গঠন করলো।
কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়, উক্ত কমিটির সদস্যরা জেলা পরিষদ সদস্যের ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করবেন।
জেলা পরিষদের অধিক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উক্ত কমিটির সুপারিশ এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।
ন্যূনতম ৫০ শতাংশ সদস্যের উপস্থিতিতে কোরাম গঠিত হবে। যদি কোনো সভায় কোরাম না হয়, তাহলে ওই সভার সভাপতি এরূপ সভা মুলতবি করবেন অথবা যুক্তিসংগত সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করে প্রয়োজনীয় কোরাম হলে সভা পরিচালনা করবেন।
এর আগে ১৯ আগস্ট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদেরও অপসারণ করে সেগুলোতে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। এবার জেলা পরিষদের কাজ চালিয়ে নেওয়ার জন্য প্রশাসকের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের পরিচালনা কমিটি গঠন করে দিয়েছে সরকার।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর সিলেট জেলা পরিষদের সংরক্ষিত ও সাধারণ সদস্য পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
তবে চেয়ারম্যান পদে ভোটের প্রয়োজন পড়েনি। কারণ ভোটের আগেই জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন জেলা আওয়ামী লীগের জেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান। ভোটে পরিষদের ১৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
তারা ছিলেন- ১ নম্বর ওয়ার্ডে (সদর উপজেলা) মাওলানা মো. মুছাদ্দিক আহমদ, ২ নম্বর ওয়ার্ডে (দক্ষিণ সুরমা উপজেলা) আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান মতি, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে (ফেঞ্চুগঞ্জ) আওয়ামী লীগ নেতা নাহিদ হাসান চৌধুরী, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে (বালাগঞ্জ) আওয়ামী লীগ নেতা মো. নাসির উদ্দীন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে (ওসমানীনগর) আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল হামিদ, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে (বিশ্বনাথ) উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমদ, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে (গোলাপগঞ্জ) আওয়ামী লীগ নেতা মো. ফয়জুল ইসলাম ফয়ছল, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে (বিয়ানীবাজার) খসরুল হক খসরু, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে (জৈন্তাপুর) মোহাম্মদ শাহজাহান, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে (গোয়াইনঘাট) যুবলীগ নেতা সুবাস দাস, ১১ নম্বর ওয়ার্ড (কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাটের আংশিক) আওয়ামী লীগ নেতা আফতাব আলী কালা মিয়া, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে (কানাইঘাট উপজেলা ও জকিগঞ্জের আংশিক) আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক আহমদ পলাশ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে (জকিগঞ্জ) ইফজাল আহমদ চৌধুরী।
এছাড়া ৫টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নির্বাচিত হন ৫জন নারী সদস্য। তারা ছিলেন- ১ নম্বর ওয়ার্ডে আমাতুজ জোহরা রওশন জেবিন রুবা, ২ নম্বর ওয়ার্ডে সুষমা সুলতানা রুহি, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে হাসিনা বেগম, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে তামান্না আক্তার হেনা ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মনিজা বেগম।
অপরদিকে, ৬নম্বর ওয়ার্ডের (বিশ্বনাথ) সদস্য অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমদ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডে (কানাইঘাট) মোস্তাক আহমদ পলাশ গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় পদ দুটি শূন্য হয়ে যায়। এই দুটি ওয়ার্ডে এ বছরের ২৭ জুলাই উপ-নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও পরবর্তীতে তা স্থগিত করা হয়।