নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনাসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের নাম। গত ১৫ বছরে বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ হয়েছে হাসিনার পরিবারের সদস্যদের নামে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টরা অসন্তুষ্ট থাকলেও ভয়ে কেউ কথা বলেননি।
তবে ৫ আগস্টের গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন এসব নাম পরিবর্তন করতে একটি কমিটি গঠন কর। সেই কমিটির কাজ চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে নীতিমালা তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নাম পরিবর্তন করা হবে।
তথ্যমতে, রাষ্ট্রীয় খরচে সরকারি প্রতিষ্ঠান বা স্থাপনায় যত্রতত্র নামকরণ বন্ধ করতে নীতিমালা তৈরি করছে সরকার। ইতোমধ্যে চার সদস্যের কমিটি কাজ করছে। এই নীতিমালা চূড়ান্ত হলে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বাতিল হবে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নাম। পরে নতুন নামকরণ করা হবে। এই তালিকায় রয়েছে সিলেট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
এ বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নামকরণ অর্ডিন্যান্স বা আইনের মাধ্যমে করা হয়েছে। তাই সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নামকরণে কী ধরনের পরিবর্তন আনা যায় সে ব্যাপারে একটি কমিটি কাজ করছে। পরিবর্তন নিয়ে একটি অভিন্ন নীতিমালা তৈরি করা হবে। নীতিমালা হলে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বদলে দেওয়া হবে সব প্রতিষ্ঠানের নাম।
উল্লেখ্য, সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে বিভাগীয় এ শহরে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নেয় তৎক্ষালীন সরকার। ওই বছরের ১ অক্টোবর অনুমোদন হয় সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইন। একই বছরের ২০ নভেম্বর প্রথম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পান অধ্যাপক ডা. মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী, ৭টি মেডিকেল কলেজ, ১টি ডেন্টাল কলেজ ও ৯টি নার্সিং কলেজকে অধিভুক্ত করে দুটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রার অংশ পরে শুরু হয় এমবিবিএস কোর্সের পেশাগত পরীক্ষা। চালু হয় বিএসসি ইন নার্সিং এবং পোস্ট বেসিক বিএসসি নার্সিং পরীক্ষাও।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের লক্ষ্যে সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় ৮০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। এ লক্ষ্যে ডিপিপি ও মাস্টার প্ল্যান তৈরি পূর্বক অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
এদিকে, আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি সিলেট-৩ আসনের হাবিবুর রহমান প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ‘সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়’ নাম পাল্টে ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট’ নামকরণ করা হয়। তবে ৫ আগস্টের পর ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়’ এর নাম পরিবর্তন করা লক্ষ্যে ‘সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (সিএমইউ)’ লিখে একটি ব্যানার প্রতিষ্ঠানটির মূল ফটকে টানান বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। ওই সময় তারা বলেন- সিলেটবাসীর দাবি উপেক্ষা করে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের তৈলবাজ এমপি হাবিবুর রহমানসংসদে প্রস্তাব তুলে ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট’ নামকরণ করিয়েছিলো। আজ স্বৈরাচার সরকার ও তার সহযোগিরা পালিয়ে গেছে, তাই ‘সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (সিএমইউ)’ও তার স্বনামে ফিরে এসেছে।