ধর্মপাশা (মধ্যনগর) প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় তথ্য গোপন করে স্বাস্থ্যসহকারী পদে আরও একজন ব্যক্তি চাকরি পেয়েছেন। উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের সুনই গ্রামের পলাশ মিয়া নামে ওই ব্যক্তি চাকরি পেতে ব্যবহার করেছেন ভুয়া নাগরিকত্ব সনদপত্র। আবার ওই নাগরিকত্ব সনদে উপস্থাপন করেছেন মিথ্যা তথ্য। তাই পলাশ মিয়ার সমস্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে চাকরি বাতিলের দাবি জানান মো. রবিউল্লাহ নামে চাকরি বঞ্চিত একজন প্রার্থী।
জানা যায়, গত বছরের ৩১ আগস্ট সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অধীনে স্বাস্থ্যসহকারী পদে সংশোধিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। চলতি বছরে ১৯ এপ্রিল ওই পদে নিয়োগ পরীক্ষা ও ৭ মে ফলাফল প্রকাশিত হয়। আর পলাশ মিয়া ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের পুরাতন ২নং ওয়ার্ডে স্বাস্থ্যসহকারী পদে নিয়োগ লাভ করেন। পলাশ মিয়া মূলত পুরাতন ১নং (বর্তমান ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ড) ওয়ার্ডের বাসিন্দা। কিন্তু চাকরি লাভের জন্য তথ্য গোপন করে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের নাম ও স্মারক (২০২৪/১০৫) ব্যবহার করে নিজেকে পুরাতন ২নং (বর্তমান ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড) ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা পরিচয় দিয়ে চাকরি পান।
অপরদিকে একই ইউনিয়নের সাবেক ২নং ওয়ার্ডের থানুরা গ্রামের বাসিন্দা মো. রবিউল্লাহ বিষয়টি জানার পর গত ১২ মে তিনি সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুবীর সরকার গত ২০ মে নাগরিকত্ব সনদপত্রের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হককে চিঠি দেন।
মোজাম্মেল হক ডা. সুবীর সরকারকে লিখিতভাবে জানান, পলাশ মিয়া সাবেক ১নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা এবং তথ্য গোপন করে সাবেক ২নং ওয়ার্ডের নাগরিকত্ব সনদপত্র তৈরি করে এবং এতে ব্যবহৃত স্মারক নম্বরটি ভুয়া।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে পাইকুরাটি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে এ সংক্রান্ত রেজিস্টার দেখে চেয়ারম্যানের দেওয়া তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়।
চাকরি বঞ্চিত মো. রবিউল্লাহ বলেন, তথ্য গোপন করায় তার (পলাশ) নিয়োগ বাতিল করে সাবেক ২নং ওয়ার্ডের প্রকৃত স্থায়ী কাউকে নিয়োগ দেওয়া হউক।
পাইকুরাটি ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বলেন, গত ১৮ মে ১০৫ নম্বর স্মারকে পলাশ মিয়াকে কোনো নাগরিকত্ব সনদ প্রদান করা হয়নি। সে সাবেক ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হয়েও সাবেক ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা পরিচয় দিয়ে তথ্য গোপন করেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুবীর সরকার বলেন, নাগরিকত্ব সনদপত্র যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানেক চিঠি দিয়েছিলাম। তিনি (চেয়ারম্যান) এ ব্যাপারে চিঠির জবাব দিয়েছেন। কিন্তু কি জবাব দিয়েছেন তা দেখিনি। জবাবের চিঠি সিভিল সার্জনের কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
উল্লেখ্য, এর আগে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় প্রতারণার মাধ্যমে আরো একজন বহিরাগত স্বাস্থ্যসহকারী পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন। রফিকুল ইসলাম নামের ওই ব্যক্তি ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার ১০নং ধুরাইল ইউনিয়নের পূর্ব পাবিয়াজুরি গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা হলেও নিজেকে ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের বালিজুরি গ্রামের বাসিন্দা পরিচয়ে চাকরি নিয়েছেন।