২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

add

প্রশাসনের তদারকিতে ন্যাযমূল্যে সবজি বিক্রি

todaysylhet.com
প্রকাশিত ১৯ নভেম্বর, মঙ্গলবার, ২০২৪ ২৩:৪৯:৩৯
প্রশাসনের তদারকিতে ন্যাযমূল্যে সবজি বিক্রি

জকিগঞ্জ প্রতিনিধি :: জকিগঞ্জে বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে ও মধ্যবিত্ত মানুষের স্বস্তির কথা চিন্তা করে ন্যায্যমূল্যে সবজি বিক্রির কার্যক্রম যৌথভাবে শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন ও সাব’আ সানাবিল ফাউন্ডেশন। বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত এভাবেই সবজি বিক্রি কার্যক্রম চলবে বলে জানানো হয়। অবশ্য প্রায় ১ মাস থেকে সাব’আ সানাবিল ফাউন্ডেশন এই কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

মঙ্গলবার দুপুর ১১টা থেকে জকিগঞ্জ পৌরশহরের পুরাতন সাব-রেজিস্ট্রার অফিস সংলগ্ন সাব’আ সানাবিল স্কুলের সামনে উপজেলা নির্বাহী প্রশাসনের সহায়তায় সবজি বিক্রির কার্যক্রম শুরু করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাব’আ সানাবিল ফাউন্ডেশন। দুপুর ১২ টার সময় আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসর (ইউএনও) ও উপজেলা প্রশাসক আফসানা তাসলিম।

উপস্থিত ছিলেন পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) অর্ণব দত্ত, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মোমিন, সমাজসেবা কর্মকর্তা বিনয় ভ‚ষণ দাস, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আতাউর রহমান, শিক্ষা কর্মকর্তা এমদাদুল হক, উপজেলা প্রানী সম্পদ অফিস কর্মকর্তা ডা. মাহফুজুর রহমান, জাইকার প্রতিনিধি ফেরদৌস জামান, জকিগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি সাংবাদিক জুবায়ের আহমদ, সদস্য আহমদ হোসাইন আইমান প্রমুখ।

সরজমিনে দেখা যায়, সাব’আ সানাবিল ফাউন্ডেশনের ৪-৫ জনের একটি দল সবজি বিক্রির এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মঙ্গলবার স্থানীয় বাজারের তুলনায় কম দামে ১২ ধরনের সবজি বিক্রি করতে দেখা যায় এখানে। স্বল্পদাশে সবজি পাওয়ায় সবজি কিনতে নারী ও পুরুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে সেখানে। কাগজে প্রতিটি সবজির দাম লেখা রয়েছে। তারমধ্যে, ডিম প্রতি হালি ৫০, বেগুন প্রতিকেজি ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, শসা ৩৫-৪৫ টাকা, ঝিঙ্গা প্রতিকেজি ৩৫ টাকা, কদু ৩৫-৪৫ টাকা, করলা ৬৫ টাকা, লাইশাক ১০ টাকা, বরবটি ৫৫, তেল ৫ লিটার ৮শ’ ১০ টাকা, লাল ডিম ৫০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে।

কথা হয় বাজার করতে আসা গৃহিণী তামান্না বেগমের সাথে। তিনি বলেন, সবজি ক্রয় করতে বাজারে যাচ্ছিলাম। যাওয়ার পথে ন্যায্যমূল্যের সবজি বিক্রির কার্যক্রম এখান থেকে খুবই স্বল্পমূল্যে বাজার করে নিয়ে যাচ্ছি। যা যা কিনলাম তাতে কম হলেও আমার ৪শ’ টাকা থেকে ৫শ’ টাকা আয় হয়েছে।

কেছরি গ্রামের চাকুরীজীবী শামীম আহমদ, ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি শামসুল ইসলাম ও কলেজ শিক্ষার্থী তানিম বলেন, এলাকায় ন্যায্যমূল্যে সবজি বিক্রির কার্যক্রম শুনে এখানে এসেছি সবজি ক্রয় করতে। বাজারে যে দাম, সে তুলনায় এখানে দাম খুবই কম যা আমাদের সাধ্যের মধ্যে। এমন দামে সবজি ক্রয় করতে পারলে আমাদের ঘরের টানাপোড়া কিছুটা হলেও কমবে।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাব’আ সানাবিল ফাউন্ডেশনের পরিচালক আখতারুজ্জামান রাজু বলেন, বাজারে এখন কোনো কিছু নিয়ন্ত্রণে নেই। হাতের নাগালের বাইরে সবজির বাজার চলে গেছে তাই সাধরাণ মানুষের কথা বিবেচনা করে আমরা এক মাস যাবৎ ন্যায্যমূল্যে সবজি বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছি। এখন আমাদের সাথে উপজেলা প্রশাসনও এগিয়ে আসায় সহজে সাধারণ মানুষকে আমরা সেবা দিতে পারবো। সকলের একাত্বতায় সবজি সিন্ডিকেট দুমড়ে-মুচড়ে দিতে চাই।

পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) অর্ণব দত্ত বলেন, ন্যায্যমূল্যে ক্রেতাদের সবজি ক্রয় করার সুবিধার পাশাপাশি সবজির সিন্ডিকেট ভাঙতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এখানে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি সবজি সংগ্রহ করা হচ্ছে। যার কারণে মধ্যস্বত্ত¡ভোগী যারা রয়েছে তাদের কবল থেকে সাধারণ ক্রেতা মুক্তি পাবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রশাসক আফসানা তাসলিম জানান, সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে এনজিও সংস্থা সাব’আ সানাবিল ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগে এখন থেকে উপজেলা প্রশাসনও শামিল হল। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেল, আলু ও ডিম সরবরাহ করা হয়েছে। তাছাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে সরাসরি কৃষকদের কাছে থেকে যাতে সহজেই তরতাজা টাকটা সবজি কম দামে সরবরাহ করা যায়, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে।