ধর্ম ডেস্ক :: যার জীবন আছে তার মৃত্যুও আছে অর্থাৎ প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর মৃত্যুর পর মানুষের প্রথম ঘাটি হলো কবর। এ ঘাটি থেকেই ভালো ও মন্দ কাজের ফল ভোগ শুরু হয়।
হজরত উসমান (রা.) বলেন, আমি নবীজি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, ‘কবর হচ্ছে আখিরাতের প্রথম ধাপ। যে এর আজাব থেকে মুক্তি পাবে, তার জন্য পরবর্তী ধাপগুলো সহজ হয়ে যাবে। আর যে মুক্তি পাবে না, তার জন্য পরবর্তী ধাপগুলো আরো কঠিন হবে’। (তিরমিজি: ২৩০৮)
পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে কবরে সবচেয়ে বেশি আজাব হয় যেসব কারণে তা উল্লেখ করা হলো-
> শিরক করা: মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলার সঙ্গে কাউকে শরিক করা সবচেয়ে বড় পাপ। এ কারণে কবরে শাস্তি হয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আপনি যদি দেখতেন যখন জালিমরা মৃত্যু যন্ত্রণায় থাকবে এবং ফেরেশতারা হাত বাড়িয়ে বলবে, তোমাদের প্রাণ বের করো। আজ তোমাদের অবমাননাকর শাস্তি দেওয়া হবে। কারণ তোমরা আল্লাহ সম্পর্কে অমূলক কথা বলতে এবং তার নিদর্শনের ব্যাপারে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করতে’। (সূরা: আনআম, আয়াত: ৯৩)
> কপট স্বভাব: কপট স্বভাবের ব্যক্তিরা কবরে শাস্তি পাবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘মরুবাসীদের মধ্যে যারা তোমাদের আশপাশে রয়েছে তাদের কেউ কেউ মোনাফেক এবং মদিনাবাসীর মধ্যেও কেউ কেউ, তারা কপটতায় খুবই পটু, আপনি তাদের চিনেন না, আমি তাদের চিনি, আমি তাদের দুইবার শাস্তি দেব এবং পরে তাদের মহাশাস্তির দিকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে’। (সূরা: তওবা, আয়াত: ১০১)
> আল্লাহর বিধান পরিবর্তন: রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলার দেওয়া বৈধ কাজকে অবৈধ মনে করা এবং অবৈধ কাজকে বৈধ মনে করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমি আমর ইবনে আমির খুজাইকে তার বেরিয়ে আসা নাড়িভুঁড়ি নিয়ে জাহান্নামের আগুনে চলতে দেখেছি। এই ব্যক্তি প্রথম মূর্তির নামে পশু উৎসর্গ করার প্রথা প্রচলন করেছিল’। (বুখারি: ৪৬২৩)
> প্রস্রাবের পর পবিত্রতা অর্জনে অবহেলা: প্রস্রাবের পর পবিত্রতা অর্জনে অনেকে অবহেলা করেন। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘প্রস্রাবের কারণে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কবরের আজাব হয়ে থাকে। অতএব, তোমরা যথাযথভাবে পবিত্রতা অর্জন করো’। (তাবরানি: ১১১০৪)
> আটকে রেখে শাস্তি দেওয়া: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমি জাহান্নামে ওই নারীকে দেখেছি যে বিড়াল বেঁধে রেখেছিল। সে বিড়ালকে খেতেও দিত না, আবার ছেড়েও দিত না- যেন সে কীটপতঙ্গ খেতে পারে। এভাবে ক্ষুধায় বিড়ালটি মারা যায়’। (মুসলিম: ৯০৪)