টুডে সিলেট ডেস্ক :: ‘সংস্কৃতিচর্চার পরিবেশ চাই, মৌলবাদের আগ্রাসন নয়’ এই স্লোগানে শিল্পী রাহুল আনন্দের বাড়িতে হামলা ও বাদ্যযন্ত্র পুড়িয়ে দেওয়ায় গান গেয়ে, বাদ্য বাজিয়ে প্রতিবাদ করেছেন সিলেটের সাংস্কৃতিক কর্মীরা। রাহুল আনন্দের জনপ্রিয় গান বকুল ফুল, বকুল ফুল সোনা দিয়া হাত কানও বান্ধাইলি গেয়ে শুরু হয় এই প্রতিবাদ।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বিকাল সাড়ে চারটায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদমিনারের সামনে এই প্রতিবাদ করা হয়।
এসময় ‘এ লজ্জা আমাদের’ ‘আমিতো মানুষের জন্য গান করি, তবুও তারা আমার সবগুলো বাদ্যযন্ত্র পুড়িয়ে দিল’ ‘আমি একটা মানুষ বাচ্চাকে জীবিত নিয়ে বের হতে পেরেছি, বাকীরা পুড়ছে বা লুট হয়েছে’ লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়ান সিলেটের সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
এসময় শহীদমিনার এলাকার আশপাশে বিভিন্ন কার্যক্রমে থাকা শিক্ষার্থীরাও এসে সাংস্কৃতিক কর্মীদের এই প্রতিবাদে এসে অংশগ্রহণ করে। রাহুল আনন্দের গান ছাড়াও এসময় সমবেত কণ্ঠে গাওয়া হয় দেশাত্ববোদক, লোক সংগীতসহ নানা ধরনের গান। প্রায় ৪০ মিনিট গান গেয়ে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গেয়ে শেষ হয় এই সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ।
এই প্রতিবাদী আয়োজনের সমন্বয়ক সংস্কৃতি কর্মী ও সাংবাদিক নয়ন সরকার বলেন, আমরা চাই এই দেশে সকল জাতি ধর্মের মানুষ সমান অধিকার নিয়ে বসবাস করবে। এই গণঅভ্যুত্থানের পর জলের গানের রাহুল আনন্দসহ অসংখ্য সংখ্যালঘুদের উপর হামলা-নির্যাতন বন্ধ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়া, সংস্কৃতিচর্চার পরিবেশ তৈরি করা, মৌলবাদের আগ্রাসন রুখে দাড়াতেই ছিলো আমাদের আজকের প্রতিবাদী আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য।
নয়ন সরকার আরও বলেন, গানের মানুষ, জলের গানের রাহুল আনন্দ। তিনি গানের মাধ্যমে গণমানুষের কথা বলেন, নিজের তৈরি বাদ্যযন্ত্র দিয়ে সংস্কৃতিকে ধারণ করেন। সেই রাহুল আনন্দের বাড়িতে হামলা হয়েছে, তার বাড়ি, বাদ্যযন্ত্র পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। শুধু এক কাপড়ে পরিবারকে নিয়ে নিজের বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে হয়েছে তাকে। এই লজ্জা আমাদের। এমন নিকৃষ্ট ঘটনায় আমরা সিলেটে সাংস্কৃতিক কর্মীরা ক্ষুব্ধ।
এই সাংস্কৃতিক প্রতিবাদে উপস্থিত ছিলেন- সাংস্কৃতি কর্মী শামসুল বাসিত শেরো, সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল করিম কিম, সোহেল আহমদ, রেজাউল কিবরিয়া, অরূপ শ্যাম বাপ্পি, রুমানা বেগম রুজি, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী শাকিলা ববি, অনলাইম এক্টিভিস্ট সহিদুজ্জামান পাপলু, সাংস্কৃতিক কর্মী নাবিল ওয়াকার আদিব, রাজেশ্বরী বণীক, বিশাল দে বৃত্ত, দেবর্ষী চৌধুরী, প্রীতম চৌধুরী শাওন, রাজ দেবনাথ, সায়েম আহমেদ, দীপ দাস, সৌমিক চৌধুরী, মেহরাব চৌধুরী, কামরুল হক জুয়েল, ফারজানা সুমী, শুভ জিৎ চৌধুরী, প্রদ্যুৎ লিটন, সুদীপ্ত হাওলাদার, সুবর্ণ শুভ, হাবিবুর রহমান, প্রীতম দাস, চিন্ময় দেব, মাসুম খান, পরাগ রেণু দেব, নাহিদ পারভেজ বাবু, টিপু দেব কাব্য, সুহেল মিয়া, হাবিবুর রহমান, সুদীপ্ত হাওলাদার, রিয়াজ মোর্শেদ, সানী দাশ, প্রত্যুষি মিথিলা, রনি দাসসহ সিলেটের সর্বস্তরের সংস্কৃতিকর্মীবৃন্দ।